Posts

Showing posts from April, 2021

বিভেদ রাজনীতিঃ নাগরিকত্ব এখন বিজেপির কাছে ভোট জেতার অন্যতম সোপান

Image
দীপেন্দু চৌধুরী এ –মাটি আমারও মাটি সে কথা সবার সামনে কীভাবে প্রমাণ করব আজ ।    মাটি, শঙ্খ ঘোষ    অনেকেই বলছেন কথাটা। এবং ঠিকই বলছেন। অনেকবার পুনরুক্তি তবু বার বার আমাদের বলতে হবে। ভোট দেওয়ার আগে পর্যন্ত আপনি হিন্দু, মুসলিম, দলিত, মতুয়া, রাজবংশী, গোর্খা, ভুটিয়া। ভোট মিটে গেলে রাজনৈতিক দল বিশেষত বিজেপি নেতৃত্বের কাছে আপনার কোনও পরিচয় নেই। ‘নাগরিকত্ব’ দেওয়া নামক এক মিথ্যে প্রতিশ্রুতি ফেরি করে বেড়াচ্ছেন বিজেপি নেতৃত্ব। ভোট আসলেই সোনার পাথরবাটি করে ভোটারদের সাজিয়ে দেওয়া হয় ‘নাগরিকত্ব’ নামক এক বিভেদকামী নীতির গল্প। ভোটের পরে বিজেপির মিথ্যে প্রতিশ্রুতির মোটা ঢোল ফেটে গিয়ে দেখবেন আপনাকে নিজের পরিচয় অর্থাৎ এক অসহায় গরিব মানুষ হিসেবেই বেচে থাকতে হবে। অসম রাজ্যের পরে এটাই এখন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভোট রাজনীতি। বাংলার ভোট চলাকালীন বিভাজনের রাজনীতির ফায়দা তুলতে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিজেপির অন্যতম হাতিয়ার। সঙ্গে রাখা হচ্ছে অনুপ্রবেশ নামক পুরনো ইস্যুকে। যাতে সহজেই মানুষকে বোকা বানান যায়। বিজেপি বলতে চাইছে, বাংলাদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ সংখ্যালঘু অনুপ্রবেশকারী নাকি আমাদের রাজ্যে ঢুকে পড়ছে। ভোটের মেরুকরণ করে

‘ভাষা উপত্যকায়’ (বরাক) কালো মেঘের ছায়াঃ ভ্রুকুটিকে ভয় পেলে হবে না।

Image
দীপেন্দু চৌধুরী ভাষা আন্দোলনের জন্য বহুল পরিচিত অসমের বরাক উপত্যকার সিলচর, করিমগঞ্জ এবং হাইলকান্দি মহকুমার বিভিন্ন মাধ্যমিক মানের স্কুলের পাঠ্যক্রমে অসম ভাষায় পঠনপাঠন বাধ্যতামূলক হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সম্প্রতি অসম মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের সচিব সুরঞ্জনা সেনাপতি, এসিএস এক বিঞ্জপ্তি জারি করেছেন। বিঞ্জপ্তির নম্বর এসইবিএ/ এবি/এজি/ ২৬/ ২০২০/১১, তারিখ- ১৮ এপ্রিল ২০২১। বিঞ্জপ্তির বয়ান এখানে উল্লেখ করা হল, ‘The Notification no. SEBA/AB/AG/26/2020/9 dated 12th April 2021 issued from this, regarding implementation of Assa m ese Langugage learning Act 2020, has been kept in abeyance, until further order .’ এই নির্দেশকে কেন্দ্র করে বাংলা ভাষা অধ্যুষিত বরাক উপত্যকায় ফিরে এসেছে ১৯৬১ সালের স্মৃতি। উপত্যকার আদি বাসিন্দাদের অভিযোগ এই বিঞ্জপ্তিতে পুরো বিষয়টা বলা নেই। যা আঁচ পাওয়া যাচ্ছে অসম সরকার ‘বাংলা ভাষা’ এবং বাঙালিদের উপর ভয়ঙ্কর আক্রমণ নামিয়ে আনতে চাইছে। অসমের বিধানসভা ভোট শেষ হওয়ার পরেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যতদূর জানা যাচ্ছে, অসমের প্রতিটি স্কুলে নবম শ্রেণি পর্যন্ত অসমীয়া ভাষায় পঠনপাঠন বাধ্যতা

আর কতজন নিরীহ মানুষের মৃত্যু হলে ভোট শেষ হবে!

Image
  দীপেন্দু চৌধুরী প্রাক নববর্ষের উৎসবের আগে চারটে রাজ্যে ‘ভোট উৎসব’ শেষ হয়েছে। বাংলা   নববর্ষ এবং ‘বৈশাখী’ উদযাপনও শেষ হল। আমাদের বাংলায় এখনও চলছে ভোট বৈশাখী। আমরা এখনও গণতন্ত্রের উৎসবে সৌৎসাহে করোনা বিধিকে উপেক্ষা করেই অংশগ্রহণ করছি। ক্ষমতা দখলের এক সম-অসম অসদৃশ্য লড়াই, রাজনৈতিক দলগুলির নেতানেত্রীদের ভোট রাজনীতির ময়দানে টেনে এনেছে। একটা করে নির্বাচনী তারিখ পার হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ নামক রাজ্যটি ‘নির্বাচনী হিংসা’-র মানচিত্রে নাম তুলে নিচ্ছে। শীতলকুচি নবতম সংযোজন। ১০ এপ্রিল রাজ্যে চতুর্থদফা ভোটের দিন নির্বাচন চলাকালীন সশস্ত্র কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিরস্ত্র মানুষের উপর গুলি চলল। এবং পাঁচজন নিরীহ নিরস্ত্র গ্রামবাসীর মৃত্যু দেখতে হল আধুনিক ভারতের বহু চর্চিত, বহু আলোচিত গণতন্ত্রের উৎসবে। এদের মধ্যে চারজনের মৃত্যু কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে। এদের প্রত্যেকের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। তরতাজা তরুণ তাঁরা । প্রথম বার ভোট দিতে এসেছিল আরও একজন ১৮ বছরের এক কিশোর। দু’টি রাজনৈতিক দলের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে গিয়ে দুষ্কৃতির গুলিতে মৃত্যু হয় ১৮ বছরের ওই যুবকের। ওঁর দু’চোখে ছিল অচেনার

সূর্যস্নাত রঙিন বেলা শেষে বৈশাখী আমন্ত্রণ

Image
সূর্যস্নাত রঙিন বেলা শেষে বৈশাখী আমন্ত্রণ দীপেন্দু চৌধুরী   মৃত্যু মিছিলের সরণী পার হতে হতে আমরা আজও চৈত্র শেষে বৈশাখী শপথে, জীবনের গান শুনতে চাইছি। থমকে যাওয়া জীবনের গান। সৃষ্টির গান, প্রলয়ের গান। বিজয়ের সঙ্গীত। মৃত্যু তুমি জিততে চাইছ কেন? যৌবনের বারান্দায় সকালের রোদ দুরন্ত গতিতে লটোপুটি খেলছে। দেখ দেখ, ভালো করে নয়ন খুলে দেখ। রোদ বলেছে, আমি ছিলাম, আমি আছি । কালো কালো মেঘের আড়াল থেকে আমি মুচকে হাসি। আমি থাকি। তোরা দক্ষিণের জানলা দিয়ে আমার দিকে চেয়ে দেখ। সকাল আটটা নটার আকাশে আমি থাকব অভিভাবকের প্রশ্রয়ে। সারা দিন প্রখর আলোয় আমি জ্বল জ্বল করব। আমি তরুণ, আমি যৌবনের দূত। ক্লান্ত মানুষকে আমি প্রশ্রয় দিয়ে শিমূল পলাশের নিচে পৌঁছে দেব। লাল গোলাপের সুবাস এনে দেব। সন্ধ্যার বিদায় বেলায় সাদা রজনীগন্ধাকে বলে যাব। বিভেদ, ভেদাভেদ নয় । বিচ্ছিন্নতা নয়। বেহালার তানে ঐক্যের ঐকতান বাজাতে হবে। বিষাদের সুর নয়, আনন্দের সুর। সম্প্রীতির গান গাইতে হবে আমাদের। আলোর বাগানে সব ফুল ফুটুক। ভালো করে চেয়ে দেখ, আচমকা কাল বৈশাখী আমাকে আজও শান্ত করতে পারেনি। আমি অশ্রান্ত, আমি অক্লান্ত, আমার প্রশ্রয়ে আদিগন্ত নীল আকাশে শি

দল বদলের নয়, দিন বদলের কথা বলছেন ওরা

Image
দীপেন্দু চৌধুরী আরো কত ছোটো হব ঈশ্বর ভিড়ের মধ্যে দাঁড়ালে! আমি কি নিত্য আমারও সমান সদরে, বাজারে, আড়ালে?       ভিড়, শঙ্খ ঘোষ কবিতার এই চারটি লাইন আজ আরও বেশি প্রাসঙ্গিক মনে হচ্ছে। বর্তমান সময় কালের সঙ্গে পরম্পরাগত আলোচনা করলে। কাল-সময়কাল আমাদের মানুষের ভিড়ে এসে দাঁড়াতে আহ্বান করে। যে বিষয়ে আত্মীক উচ্চারণ করতে হবে সেটা আমাদের ভাবতে শিখিয়েছে। ভাবতে শেখাচ্ছে। সোভিয়েত রাশিয়া সহ সমাজতান্ত্রিক দেশগুলিতে যখন আভ্যন্তরীন পরিবর্তন নজরে পড়ছে, সেই সময় একটি কার্টুন জনপ্রিয় হয়েছিল। মার্ক্স এবং এঙ্গেলস মস্কোর রাস্তায় টুপি হাতে ভিক্ষা চাইছেন, ছবির নীচে লেখা আছে ‘কিন্তু আমাদের তত্ত্বটা ভুল ছিল না’। বামপন্থী রাজনীতি বা সংগঠন করে যারা বড় হয় তাদের মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদী তত্ত্ব যেমন পড়তে হয়। সেই সঙ্গে শিখতে হয় আত্মসমালোচনা করার অভ্যাস। আত্মসমীক্ষা করার অভ্যাস। পশ্চিমবঙ্গ নামক একটি রাজ্য ২০২১ সালে এসে নতুন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েছে। একদিকে মূল্যবোধের অবক্ষয়, মানবতার অবনয়ন পাশাপাশি জাতপাত এবং ধর্মের নামে পরিবার, সমাজকে ভেঙে দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্র। এখানে দাঁড়িয়ে রাজ্যের বাম গণতান্ত্রিক শক্তির জোড়ালো উপস্থিতির প্রয়োজ

গণতন্ত্রের শৃঙ্খল ভেঙে এ কেমন নির্বাচন!

Image
  দীপেন্দু চৌধুরী দিন কয়েক আগে বাজার করতে গিয়েছিলাম। সবজিওয়ালা বলল, কাকু শনিবার আমাদের ব্যবসা হবেনি। আমরা বসবনি। বুঝলাম ১০ এপ্রিল আমাদের অঞ্চলে ভোট আছে। জানতে চাইলাম, ভোট চলবে সারাদিন। বাজার বসতে অসুবিধা কোথায়? পাশের আর একজন সবজি বিক্রেতা উত্তর দিল, কাকু আমাদের কেন অসুবিধা হবে? ওই যে ভিন রাজ্যের পুলিশ এয়েছে। উয়ারা বাংলা কিচ্ছু বুঝে না। তাই বাজার কমিটির লোক এসে বলি গেল বাজারে মাল নিয়ে না বসায় ভালো।   হর হর মহাদেব.........। মুখ ঘুরিয়ে দেখি দু’জন গাজন সন্ন্যাসী পাশে দাঁড়িয়ে। ছাইভুসি মেখে শিবের বেশে তাঁরা ঘুরছে। হাতে চড়কের লাঠি। অন্যান্য বছর দু’চারজনকে গাজন উৎসবের আগে আমাদের অঞ্চলে দেখা যায়। কিন্তু এই বছর চড়ক উৎসবের আগে ১৪ দিন যাবৎ এদের দেখা যাচ্ছে। এই বছর সংখ্যায় অনেক বেশি।   ‘’............ঢাকীরা ঢাকের টোয়েতে চামর, পাখির পালক, ঘণ্টা ও ঘুঙুর বেঁধে পাড়ায় ঢাক বাজিয়ে সন্ন্যাসী সংগ্রহ কচ্চে; গুরু মশায়ের পাঠশালা বন্দ হয়ে গিয়েচে- ছেলেরা গাজনতলাই বাড়ি করে তুলেচে; আহার নাই; নিদ্রা নাই; ঢাকের পেচোনে পেচোনে চামর ছিঁড়ছে, কখন ঢাকের পেছনটা দুম দুম করে বাজাচ্চে- বাপ মা শশব্যস্ত, একটি না ব্যায়রাম কল্