Posts

Showing posts from May, 2019

ঘুম ভাঙ্গা ভোরের প্রহর গুনছি

Image
দীপেন্দু চৌধুরী সপ্তদশ লোকসভা ভোটের পরে ফলাফল এবং নিজেদের সাংগঠনিক ব্যর্থতা বিশ্লেষণ করতে ২৬ মে এবং ২৭ মে সিপিএমের পলিটব্যুরোর বৈঠক বসেছিল। পলিটব্যুরো সূত্রে জানা যাচ্ছে, জাতীয় স্তরে সিপিএম-সিপিআইয়ের ভোটের ভাগ ছিল ৭ শতাংশ। ২০১৪ সালে সেটা নেমে এসেছিল ৪ শতাংশে। এ বার তা নেমে এসে দাঁড়িয়েছে ২.৩ শতাংশে। সংসদে বামফ্রন্টের সদস্য মাত্র ৫ জন। এই পরিসংখ্যান থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, জাতীয়স্তরে বামেদের মতো অন্যান্য বিরোধী দলগুলি এতটা ধাক্কা খায়নি। পলিটব্যুরোর বৈঠকের পরে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি দলের ব্যর্থতার সমস্ত দায় নিয়ে বলেন, ‘’কোনও জোটেই কাজ হত না। কারণ ২০০-র বেশি আসনে বিজেপি ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে।‘’ সিপিএম নামক দলটির ধারাবাহিকভাবে এই রক্তক্ষরণের কারণ কি? দেশের বামপন্থী তাত্বিক নেতা, লেখক, সমাজবিঞ্জানী, ইতিহাসবিদ, অর্থনীতিবিদেরা আছেন। তাঁরা মার্কসবাদ-লেনিনবাদের সময়োপযোগী ব্যখ্যা বিশ্লেষণ করছেন। বামপন্থায় আস্থা রাখতে বলছেন। কিন্তু সেই সঙ্গে গ্রামবাংলায় বামপন্থীদের সংগঠনের ভিত্তি ভেঙে পড়ার কথাও কেউ কেউ আলোচনা করছেন। ভারতের কৃষি সমস্যা নিয়ে ঐতিহাসিক পদযাত্রা এবং ধারাবা

নতুন রথের নতুন সারথীর খোঁজে বাংলা

Image
দীপেন্দু চৌধুরী   সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের পরে যে ফল আমাদের সামনে এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে ভারতের আঞ্চলিক দলগুলির অস্তিত্ব বিপন্ন। এবারের নির্বাচনে বেশিরভাগ আঞ্চলিক দল মুখ থুবড়ে পরেছে। অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে উত্তরপ্রদেশে মায়াবতীর বহুজন সমাজবাদী পার্টি এবং অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টী নিজেদের মধ্যে জোট করেও আশানুরূপ ফল করতে পারেনি। মাত্র তিনটে রাজ্যের আঞ্চলিক দল বিজেপি ঝড়ের বাইরে আলাদা অস্তিত্ব বজায় রাখতে পেরেছে। অন্ধ্রপ্রদেশে জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস, তেলেঙ্গনায় কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের টিআরএস পার্টি এবং ওড়িষায় নবীন পট্টনায়কের বিজেডি দল আঞ্চলিক দল হিসেবে আলাদা পরিচিতির স্বীকৃতি ধরে রাখতে পেরেছে। ওড়িষায় নবীন পট্টনায়ক পঞ্চমবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসছেন। এটাও একটা ইতিহাস ভারতীয় গণতন্ত্রে । সপ্তদশ নির্বাচনেও মোদী হাওয়া, মোদীর উন্নয়নের শ্লোগান, বালাকোটে পাল্টা আক্রমণ, মোদী সরকারের গরিবদের জন্য শৌচালয় গড়ে তোলার অভিযান। ২৬মে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কয়েকজন সদস্য প্রশ্ন তুলেছেন । তাঁরা বলেছেন, ‘নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ যে পর্যায়ে গিয়ে ভোট করেন কংগ্রেস তার ধারে কাছে

সাগর ডাকের ঢেউ মানবতার ঢেউ গুনছি

Image
দীপেন্দু চৌধুরী গণতন্ত্রের বিজয়া বা বিসর্জন বলে কি কিছু হয়? বা হবে কোনদিন? বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে নানান কৌশলে সমাজ, সামাজিক মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এবং হচ্ছে। গণতন্ত্রকে কুশলী তত্বে, প্রায়োগিক তথাকথিত এক  সাংস্কৃতিক আধারে নিমজ্জিত করে এক নতুন ভাষায় মিশ্রণ খাওয়ানোর প্রচেষ্টা হয়। যুগে যুগে এই প্রচেষ্টা গড়ে তুলতে সুযোগ নেওয়া হয় বিভাজনের। প্রাপ্য সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা তার অন্যতম হাতিয়ার। এক কথায় বলা যায়, গণতন্ত্রকে ধরে নেওয়া হয়েছে ‘নির্বাচন’কে হাতিয়ার করে প্রভুর মসনদে আসীন হওয়ার মাধ্যম হওয়ার। বছরের বছর এই ব্যবস্থা মজবুত এবং বিশ্বাসযোগ্য করে তোলার জন্য নিত্য নতুন সমন্বয়ের ভাষা শোনা যায় পরীক্ষিত এবং সামাজিকভাবে স্বীকৃত প্রথমসারির নাগরিকদের মুখে। একুশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে এসেও আমাদের বলতে হয় দেশের প্রায় প্রতিটি আম নাগরিক হারিয়ে ফেলছে প্রকাশ্যে আলোচনা করার অধিকার। হারিয়ে ফেলছে প্রতিবাদ করার সুযোগ। আভ্যন্তরীণ এক অদৃশ্য আতঙ্ক চেপে ধরতে চাইছে পাশাপাশি বসবাস করা, প্রতিদিনের প্রাত্যহিক চেনা মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনে। এই সভ্যতা কি আমরা চেয়েছিলাম? এই সভ্যতা কি আমরা চাই? সম্প

ভারতীয় গণতন্ত্রে দলছুট নাগরিক

Image
দীপেন্দু চৌধুরী আমি আর কোনোদিন তাদের পেরিয়ে বাড়ি পৌঁছতে পারব না, চারিদিকে নেমে আসছে ছায়া।                                                    মণীন্দ্র গুপ্ত ভারতের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন চাপানউতোরের মধ্যে নতুন তরজা বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নতুন আক্রমণ। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধিকে নতুন ভাষায় আক্রমণ। তার উত্তর দিয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধি এবং কংগ্রেস দলের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গাঁধি বঢরা এবং কংগ্রেসের অন্যান্য শীর্ষ নেতৃত্ব । ভারতের বৃহত্তর গণতন্ত্রে ‘কু-কথা’ বলার রেওয়াজটা সম্ভবত শুরু হয়েছে ‘সেন্স অব হিউমার’-এর চর্চা কমে যাওয়া এবং চন্ডিমণ্ডপ নামক এক আড্ডা থেকে আমরা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর থেকে । সম্ভবত এই কারণে সরাসরি ব্যক্তিগত আক্রমণে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। গ্রামগঞ্জের চন্ডিমণ্ডপে বসে দাবা খেলা, তাস খেলা এবং ক্যারাম বোর্ডের খেলা প্রায় নেই বললেই চলে। ভারতের বিভিন্ন প্রজন্মের মানুষ গতিশীল দুনিয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে প্রত্যুৎপন্ন কৌতুক চর্চা প্রায় ভুলে যেতে বসেছে। শহর কেন্দ্রিক নাগরিক সভ্যা

গণতন্ত্রে থাকুন, দুধ খাইবার বাটি দিব

Image
দীপেন্দু চৌধুরী ভোটচতুর্থী শেষ হয়ে ভোটপঞ্চমী এগিয়ে আসছিল। ভারতীয় গণতন্ত্রের সব চেয়ে বড় উৎসবের সময়কাল। সপ্তদশ লোকসভা উৎসব। চুপ করে বসে থাকা কি সম্ভব? দুয়াত কলমের সময়কাল সেই কবে চলে গেছে। ইতিহাসে স্থান হয়েছে। অথবা বলা ভালো ভারতীয় মিউজিয়ামে স্থান হয়েছে। আরও বলা যায় কলকাতা ভিক্টোরিয়াল মেমোরিয়ালে গেলে খুঁজে পাওয়া গেলেও পাওয়া যেতে পারে। সম্প্রতি জানতে পারলাম দিলীপ কুমার রায়কে ১৯২৪ থেকে ১৯২৮ সালে লেখা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিঠি ১৯৮৫ সালে কলকাতার ভিক্টোরিয়াল মেমোরিয়ালকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে। সরোজ কুমার চ্যাটার্জি এই চিঠির সম্ভার ভিক্টোরিয়া কতৃপক্ষের হাতে তুলে দিয়েছেন। এইসব চিঠির প্রদর্শনী (৮ মে থেকে ৯ জুন)-র ব্যবস্থা করা হয়েছে কলকাতার সেরা সৌধ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের ‘প্রিন্স সভাগৃহে’। তিনি ভগবান নন। তিনিও মানুষ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা বলছি। তিনি যে সময় চিঠিগুলি লিখেছিলেন দোয়াত, কালি কলম ব্যবহার করে চিঠিগুলি কি লিখেছিলেন? কিন্তু তাঁর চিঠিতে তৎকালীন সমসাময়িক সময়ের সামাজিক টানাপড়েন, রাজনৈতিক ঘনঘটা, সঙ্গীত, সংস্কৃতির পারস্পরিক সম্পর্ক ইত্যাদি নিশ্চয় এসেছে। আমার হাতের কাছে রবীন্দ্

রাগসঙ্গীতের আলাপচারিতার ‘আত্মীয়তা’ একটি বই

Image
দীপেন্দু চৌধুরী শুরুটা এরকম ধ্রুপদী পর্যায়ে উঠতে পারে প্রেক্ষাগৃহের দর্শক-শ্রোতৃমণ্ডলীদের কেউ বুঝেও উঠতে পারেনি। কারণ আমরা গিয়েছিলাম সঙ্গীত বিষয়ক একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে । অনুষ্ঠানটি ছিল ২৭ এপ্রিল।  অভিজাত জি ডি বিড়লা প্রেক্ষাগৃহের মঞ্চের পর্দা তখনও ওঠেনি। আমরা বাদ্যযন্ত্রের আওয়াজ পাচ্ছি। তবলা বাজছে। বাজছে সানাইয়ের নিচু মাত্রার সূক্ষ তান। বুঝে উঠতে পারছিলাম না, বই প্রকাশ হবে না সঙ্গীত সন্ধ্যা? পর্দার আড়াল থেকে সঞ্চালক সৌগত চট্টোপাধ্যয়ের ঘোষণা শুনলাম আমরা। সৌগত বলছে, আলোক শীর্ষক সঙ্গীত সংকলন প্রকাশের আগে আমরা মঙ্গলধ্বনির অনুষ্ঠান শুনব। সানাই বাজাবেন আহমেদ আব্বাস খান। সঙ্গে তবলায় সঙ্গত করবেন সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সানাই শিল্পী আহমেদ আব্বাস খান তাঁর সানাইয়ের সুরের মূরচ্ছনায় আমাদের আবিষ্ট করে রাখলেন। তাঁর সঙ্গে তবলায় সঙ্গত করলেন সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় সমান উচ্চতায়। ধ্রুপদী সঙ্গীত বিষয়ক একটি বইয়ের প্রকাশ অনুষ্ঠানের পরম্পরা এবং মর্যাদা রেখেই উদ্যোক্তারা এমন একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন। আহমেদ আব্বাস খান বংশপরম্পরা এবং ধারবাহিকতায় এদিন সানাই বাজালেন। সানাই শিল্পী আহমেদ আব্বাস খানের প