Posts

Showing posts from October, 2019

আজাদ হিন্দ ফৌজের তহবিল ও সম্পদ কোথায়

Image
দীপেন্দু চৌধুরী বর্তমান সময়ের ইতিহাসবিদরা বিষয়টা নতুন করে গবেষণা করতে পারেন। অথবা সমাজ বিঞ্জানীরা। একজন প্রয়াত, দ্বিতীয়জন মৃত্যুর পরেও ‘জীবন্মৃত’-র বিতর্ক টেনে চলেছেন। এবং বিভিন্ন ব্যক্তি, সংগঠন নিত্য নতুন তর্কবিতর্কের বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে খুঁচিয়ে তুলছে। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের আলোচ্য দু’ই প্রধান ব্যক্তিকে কারণে অকারণে এই বিতর্কে জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে। আমরা বলতে চাইছি জওহরলাল নেহরু এবং সুভাষচন্দ্র বসুর কথা। ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের একশো চৌত্রিশ বছরের ইতিহাসে বহু বিখ্যাত নেতার আবির্ভাব হয়েছে। কিন্তু বিশেষভাবে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের পরিপ্রেক্ষিতে তিনজন ব্যক্তির নাম আমাদের প্রতিনিয়ত উচ্চারণ করতে হবে। এই তিনজন হলেন, মোহনদাস করমচাঁদ গাঁধি, পণ্ডিত জহরলাল নেহরু এবং  নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু। স্বাধীনতা সংগ্রামের সবচেয়ে কঠিন সময়ে এই তিনজন সর্বজনগ্রাহ্য নেতা ছিলেন। স্বাধীনতা উত্তর আধুনিক সময়েও এই তিনজন বিদ্যান ব্যক্তির উপস্থিতি ভীষণভাবে আকর্ষণ করে দেশ এবং সমাজকে । নেহরু রাজনীতিতে এসেছিলেন বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে। ‘হোম রুল’ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে। পরের সময়টা স্বাধীনতা পূর্ব এবং স্বাধী

শুন্য পরিসরে নতুন পথের খোঁজে দুই দল

Image
দীপেন্দু চৌধুরী সত্যিইতো গণতন্ত্রে উত্তরাধিকার বলে কিছু হয় না। আলোচনা হয়, বিতর্ক হয়, কূটচালে কূটনৈতিক বিতর্ক হয়। ভারতের ক্ষেত্রে এই বিষয়ে আরও সুবিধা হয় যখন ‘নেহরু-গাঁধি’ পরিবারকে আক্রমণ করা হয়। উদাহারণ হিসেবে বলা হয়ে থাকে কয়েক দশক ধরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে এই পরিবারের সদস্যরা বসেছেন এবং দেশ শাসন করেছেন। রাজনৈতিক বিশেষঞ্জদের অভিমত ইন্দিরা গাঁধি প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন জহরলালের কন্যা বলে নয়। না কংগ্রেস পার্লামেন্টারি পার্টির অধিকাংশ ভোটেও নয়। সেসময় ভোট গণনাই হয়নি। কামরাজ আড়ালে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে বলেন, কনসেনসাস ইন্দিরার পক্ষে। একই ঘটনা রাজীব গাঁধির ক্ষেত্রেও আমরা দেখেছি। ইন্দিরা গাঁধি দু’বছর কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে অভিঞ্জতা অর্জন করেছিলেন। রাজীবের তেমন অভিঞ্জতা ছিল না। মন্ত্রীসভার কোনও অভিঞ্জতা ছাড়াই তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রী। তবে বিচক্ষণতায় তিনি কারও চেয়ে কম ছিলেন না। শক্ত হাতেই দেশের হাল ধরেছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও রাজীব প্রশংসা পেয়েছিলেন তাঁর দক্ষতার কারণে। ভারতে ‘কংগ্রেস হাইকমান্ড’ নামক শব্দবন্ধের ব্যবহার সংবাদ মাধ্যম

পদাতিক কবি এবং শব্দ ফকিরের ঝোলা

Image
দীপেন্দু চৌধুরী সময় যখন হারিয়ে যাচ্ছে, জীবন থমকে আছে, নতুন শতাব্দীর গতিশিল চলমান কলকাতার ফুটপাথ আলিঙ্গন করতে চায়। ‘ আমার বাংলা’ একুশ শতাব্দীর সবুজ পাতার প্রচ্ছদে নতুন নতুন ভাষায় ফিরে ফিরে আসে। নীল-সাদা, সাদা-নীল সভ্যতার নতুন নতুন প্রচ্ছদের আঁকিবুঁকিতে। ঋতুর বৈচিত্রের খোঁজে কেউ আকাশের দিকে চেয়ে বলে, ‘যেখানে আকাশ চিকন শাখায় চেরা/ চলো না উধাও কালেরে সেখানে ডাকি;/ হা-হতোস্মি সড়কে বেঁধেছি ডেরা,/ মরীচিকা চায় বালুচারী আত্মা কি?’ (পদাতিক, সুভাষ মুখোপাধ্যায়) । ১৯৪০ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘পদাতিক’ । যত সময় গেছে সুভাষ কবি প্রাক্তন না হয়ে আধুনিক হয়েছেন। কারণ তিনি ড্রয়িংরুমে বসে মানুষের কথা বলতে চেয়েছেন বা লিখে গেছেন এমনটা কেউ কি মেনে নিতে পারে ? দাবি করতে পারে?    ২০১৯ সালটা শুরুই হয়েছিল কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের শপথ বাক্যে। ‘সালেমনের মা’-য়ের খোঁজে। বছরের শুরুতে ‘সপ্তাহ’ (সুভাষ মুখোপাধ্যায় একটা সময় সম্পাদক ছিলেন) পত্রিকা এবং দে’জ প্রকাশনীর যৌথ উদ্যোগে ‘ইউনিভার্সিটি ইন্সটিটিউট’ সভাঘরের অনুষ্ঠান দিয়ে। যার কথা আজকের নাগরিক কলকাতা বারে বারে উচ্চারণ করছে, যার শব্দনদ

দূষণপ্রবণ ভারত নতুন করে ভাবছে ভাবাচ্ছে

Image
দীপেন্দু চৌধুরী  শহর কলকাতার দূষণ নিয়ে আম আদমি কতটা সচেতন? হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, ফেসবুক আত্মীয়, বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি। বলতে চাইছি, ওইসব সামাজিক মাধ্যম যারা ব্যাবহার করেন তাঁদের মধ্যে একটা গোষ্ঠীগত আত্মীয়তা হয়েছে বললে কি বাতুলতা হবে? বড্ড গরম পড়ছে, অথবা আগে এতো বৃষ্টি হতনা। এখন বর্ষার সময় বৃষ্টি হয় না। বৃষ্টি হয়, বৃষ্টি হয় দুর্গাপুজোর সময়। অর্থাৎ শরৎ ঋতুতে। বেশির ভাগের মুখে এই ধরণের সংলাপ শুনতে আমরা অভ্যস্ত। কেউ কেউ বলেন বটে এটা ‘গ্লোবাল ওয়ারমিং’-র জন্য হচ্ছে। ওই পর্যন্ত।  কলকাতার বায়ুদূষণ এবং বায়ুদূষণের কারণ নিয়ে নাগরিক কলকাতা খুব বেশি মাথা ঘামাতে চায় না। ‘ খাও-জিয়ো-পিয়ো’ গতিশীল নাগরিক কলকাতা নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। ব্যতিক্রম ‘ফ্রাইডেজ ফর ফিউচার কলকাতা’-র  ( Friday’s for Future Kolkata ) তরুণ কর্মীরা। এবং এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন কলেজের পরিবেশ সচেতন ছাত্র-ছাত্রীরা। কুয়াশাচ্ছন্ন দিল্লীর দিল্লিকে নিয়ে পরিবেশবিদ, সরকারি কেরানি, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার আধিকারিকদের চিন্তা করতে দেখা যায়। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশককে ‘পরিবেশ রেনেসাঁ’ ( Global

ওরা চেনা পথে বসে থাকে হেঁটে যায়

Image
দীপেন্দু চৌধুরী মাস দুয়েক আগে হবে সম্ভবত। থিয়েটার রোড দিয়ে হাঁটছি, ময়দান হয়ে প্রেসক্লাব যাব। অরবিন্দ ভবনের উল্টোদিকের ফুটপাথ ধরে হাঁটছি। হঠাৎ শুনতে পেলাম, কেউ একজন বলছে, ‘আমাকে কিছু খাওয়াবেন’? স্পষ্ট বাংলায়। সুস্পষ্ট এবং দৃঢ় উচ্চারণে। মুখ ঘুরিয়ে দেখলাম হ্যা আমাকেই বলল। ছ’ফুট লম্বা একজন মানুষ। একমুখ কুচকুচে কালো দাড়ি, কোঁকড়ানো চুল। টিকালো নাক। চওড়া কপাল। একটা ছেড়াঁ, ময়লা তেল চিট চিটে প্যান্ট পরে আছে। গায়ে কোনও জামা না থাকার জন্য কালো ময়লা লোমে ঢাকা বুক দেখা যাচ্ছে । আমি দাঁড়িয়ে আছি দেখে খুব আস্তে আবার আমাকে বলল, ‘আমাকে কিছু খাওয়াবেন’? আমি আবার ভালো করে লোকটাকে দেখলাম। গ্রীক দেবতাদের মতো মুখের অবয়ব। আমি শিউরে উঠলাম। লোকটাকে আমার খুব চেনা মনে হল। কয়েক মিনিট থমকে দাঁড়ালাম। শেষ পর্যন্ত মুখ ঘুড়িয়ে নাগরিক কলকাতার শহরে নিজেকে ভিড়িয়ে দিলাম। এই সংস্কৃতি আমিও রপ্ত করতে শিখেছি। ক্লাবে গিয়ে একটু ছ্যাবলামো করে বাড়ি চলে যাব।    সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত একটা অপরাধবোধ আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। আমি সচেতন নাগরিক হিসেবে গত শতাব্দীর আশির দশক থেকে ভিক্ষে দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। একটা সময় কম বয়সী ভিখির

প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের মিলনের সেতু অনুবাদ সাহিত্য

Image
দীপেন্দু চৌধুরী আলোচনাসভায় যখন প্রথম শুনলাম চমকে উঠেছিলাম। আদিবাসী সমাজে, বিশেষত সাঁওতালী সমাজের  সন্তানের জন্মের পরে তাঁর বাবা অথবা পরিবারের অভিভাবক সদ্যজাত সন্তানের নাভি নিজেদের বাড়িতে মাটি খুঁড়ে গর্তে ফেলে, মাটি চাপা দিয়ে রাখে। বংশ পরম্পরায় এই নিয়ম চলে আসছে ভারতের সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মধ্যে। সাংস্কৃতিকভাবে আদিম বিশ্বাস থেকে এই প্রথা চলে আসছে। লোকসংস্কৃতি বললেও বলা যায় আবার ‘লোকাচার’ বললে কি অযৌক্তিক শোনাবে?  আদিবাসী সমাজের সাঁওতাল সম্প্রদায়ের মানুষ আদিম বিশ্বাস এবং মূল্যবোধ এখনও বাঁচিয়ে রেখেছে নিজেদের সভ্যতা এবং মাটির টানে। সম্প্রতি একটি আলোচনাসভায় এই তথ্যের উল্লেখ করলেন সাঁওতালি ভাষার কবি, সাঁওতালি ভাষা থেকে বাংলা এবং বাংলা থেকে সাঁওতালী ভাষার সুপরিচিত অনুবাদক সুবোধ হাঁসদা। তিনি এদিন উল্লেখ করেন কিছুদিন আগে একটি সাঁওতাল দম্পতি পরিবার আমেরিকায় গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁদের একটি পুত্রসন্তান হয়। আমেরিকায় ছুটি কাটিয়ে ফেরার সময় শিশুটির নাভিকুন্ড সঙ্গে করে নিয়ে এসে নিজেদের গ্রামের বাড়িতে মাটি চাপা দিয়ে রেখে দেয় তাঁরা। পারিবারিক কৃষ্টিকে মনে রেখে।    বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর।