Posts

Showing posts from October, 2020

সূর্যের পাহারায় ভাঙা মেঘের গান

Image
  দীপেন্দু চৌধুরী দুর্গাপুজো মানেই মিলনোৎসব। ভারতের অঙ্গ রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে বসে বলতেই হবে বাঙালির সেরা উৎসব। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ঋতু চেনার সময় বর্তমানে নিজেকে বড় অসহায় মনে হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে ছয় ঋতুর বৈচিত্র উপভোগ আমরা শৈশব কৈশোর যৌবনে করেছি। তখনও জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াল গ্রীনহাউস গ্যাস আমাদের শৈশব দখল করতে পারেনি। কৈশোর যৌবনেও গ্রীনহাউস গ্যাস, জলবায়ু পরিবর্তন, ঘন ঘন কালবৈশাখী ঝড়, সাইক্লোন এসব শব্দ আমাদের দৈনন্দিন অভিধানে ছিল না। শরৎকালে সন্ধ্যের পরে টুপ টুপ করে হিম পড়া। না কোনও শব্দ হয় না। নীরব নিভৃতে আমাদের দেহের বর্ষা শেষের উত্তাপ শুষে নিতে থাকে। শরৎকালের নিঃশব্দ হিম। শিশির ভেজা শরতের কাশফুল, শিউলিফুলের শাশ্বত সাদর আমন্ত্রণে আমরা আমাদের স্মৃতি মন্থন করি। দুর্গাপুজোর সময়কাল শরৎঋতু। এই কারণে শিউলিফুলের সঙ্গে একটা দীর্ঘায়ত সম্পর্ক আমাদের গড়ে ওঠে। আমার মনে আছে, বিগত শতাব্দীর ৭৬ সালের কথা। আমার এক বন্ধুর বাবার ধান ভাঙা এবং গম ভাঙার কল ছিল। নতুন তিনতলা বড় বাড়ির এক তলায় ওদের এই ব্যবসা ছিল। ওদের বাড়িতে খুব বড় করে বিশ্বকর্মা পুজো হতো। পুজোরদিন খুব ভোরে আমার সেই বন্ধু আমাদের বাড়ি চলে আস

বহ্নিমান চিতায় আজও মানবতার ঠিকানা খুঁজি

Image
  দীপেন্দু চৌধুরী যে শ্মশানে আগুন জ্বলছিল, উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের তত্বাবধানে তৈরি অস্থায়ী শ্মশান আপনি আপনারা চেনেন? আমি চিনতাম আগে? হাথরসের ৪ টি দলিত পরিবারের সদস্যরা কেউ এই অস্থায়ী শ্মশানের ঠিকানা আগে জানত? হ্যা, ওই গ্রামে মাত্র ৪ টি দলিত পরিবার বাস করে। একই গ্রামে ৪০০ ঠাকুর পরিবার ‘জাত-পাত’-র সমীকরণ মেনে উঁচু জাতের সামন্ত গরিমা নিয়ে বাস করে। উচ্চবর্ণের বংশ তাঁদের। উচ্চবর্ণের মানুষ। তারা জানত দলিত কন্যাকে পৈশাচিক ধর্ষণের পরে কি করিতে হইবে। নির্ভয়া কান্ডের পরে সারা দেশ শিহরিত হয়েছিল। প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল। একুশ শতাব্দীর করোনা সভ্যতায় আমরা আরও চমকে উঠলাম। একটি ১৯ বছরের নিষ্পাপ কিশোরী যাঁকে নিপীড়ন করে ক্ষতবিক্ষত করে দেওয়া হল। তার জিভ কেটে দেওয়া হল। নারীজন্মকে বহ্নিমান চিতায় তুলে একদল প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তি সমাজের প্রথমসারির মোড়লকে জানান দিল, আমরা তোমাদের পাশে আছি। এই প্রশাসন ভারতের আধুনিক গণতন্ত্রের প্রশাসন! কিন্তু আমরা বাহ্মণ, ক্ষত্রীয়, ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের হুকুম তালিম করতে প্রস্তুত থাকি। চিতায় দলিত নির্যাতিতা   কিশোরীর দেহ রাতের অন্ধকারে দাহ করে বলি, ‘জয় হোক ঠাকুরদের’ । জয় হোক বলদ

কৃষিক্ষেত্রে যন্ত্রসভ্যতার অভিশাপ কি নেমে আসছে!

Image
দীপেন্দু চৌধুরী ২০০৭-০৮ সালের আর্থিক সংকট থেকে বিশ্বের কর্পোরেট সংস্থাগুলি বেরিয়ে আসতে পেরেছিল। এই তথ্যের সারবত্তা সারা বিশ্বজুড়ে বৃহৎ ব্যবসার ক্ষেত্রগুলি বিশ্লেষণ করলেই পাওয়া যায়। প্রাক কোভিড-১৯ আর্থসামাজিক ব্যবস্থায় পুঁজিবাদ স্বমহিমায় ফিরে এসেছে। পুঁজিবাদকে এই ব্যবস্থায় ফিরে আসতে সারা বিশ্বে সাহায্য করেছে বিভিন্ন দেশের সরকার। কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে প্রত্যক্ষ এবং অপ্রত্যক্ষভাবে পুঁজিবৃদ্ধির জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে রাষ্ট্র নামক আরও এক বৃহৎ শক্তি । আমা দের দেশ ভারতে রেল সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিলগ্নীকরণের ঝোঁক সেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। কোভিড-১৯ আবহের মধ্যে ভারতের ধনীদের বিষয়ে একটি সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। আইএফএল ওয়েলথ হুরুন ইন্ডিয়ান রিচ লিস্ট ফর ২০২০ এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে, ভারতের প্রথম ১০০ জন বিত্তবানের হাতে দেশের প্রায় ৬৪ শতাংশ সম্পদ রয়েছে। এই তালিকায় আরও দাবি করা হয়েছে, ১০০০ কোটির বেশি সম্পত্তি আছে ভারতের ৮২৮ জনের কাছে। এদের সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ ৮২১ মিলিয়ন ডলার। আম্বানী-আদানী সহ ভারতে প্রথমসারির ১০টি শিল্পগোষ্ঠী দেশের মূল কাঠামো নিয়ন্ত্রণ করছে। এই রিপো