মুক্তচিন্তার সাংবাদিক গ্রাম-শহরে আজও হাঁটছে
দীপেন্দু চৌধুরী
এই লেখা যখন লিখতে বসেছি সেদিন ছিল ১০ ডিসেম্বর, ২০২১। ৭৩তম
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের দিন।১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর ভারত সহ ৪৮টি দেশ মানবাধিকারের
সর্বজনীন সনদে স্বাক্ষর করে। এই ঘোষণাপত্রের ৩০টি ধারায় বর্ণিত অধিকারগুলি স্বাক্ষরকারী
নাগরিকদের পাওয়ার কথা। সাংবাদিক হিসাবে আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এই অধিকার আমরা
পাচ্ছি কিনা সেসব দেখার। সেই বছরের কোভিড-১৯ অভিঘাত নিয়েই ১০ ডিসেম্বর নতুন করে আবৃত্তি
করলাম, সংবিধানের ন্যায় ও নীতির কথা।সাংবাদিকতার আঙিনায় ধ্রুপদী দায়িত্ব পালনের জন্য
ভারতীয় সংবিধানের নীতি-শৃঙ্খলা আমাদের বার বার পড়তে হবে।আমাদের আবৃত্তি করতে হবে, একজন
সাংবাদিকের রক্ষা কবচের জন্য। একজন ভারতীয় নাগরিক হিসাবে এই দায়িত্ব আমাদের উপর এসে
বর্তায়। মাৎস্যন্যায় কখনও ন্যায় হতে পারে না।সাংবাদিকদের লড়াই মাৎস্যন্যায়ের বিরুদ্ধে।
এক কথায় বললে সত্যিইতো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরেই আমরা স্বাধীন হলাম। আমাদের দেশ স্বাধীনতা
পেল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক আগেই বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ মানবতাবাদী কবি, সাহিত্যিক,
নাট্যকার, চিত্রশিল্পী এবং সাংবাদিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পান।তাই
১৯১৩ সালকে আমরা বলতেই পারি, আন্তর্জাতিকস্তরে বাংলা ভাষা স্বীকৃতি পেল। বাংলা সাহিত্য
স্বীকৃতি পেল। আমাদের ভাষা এবং গর্বের ইতিহাস তৈরি হল এদিন থেকে।
রবীন্দ্রনাথ নিজে সম্পাদক না হলেও মানবিক সাংবাদিকতার পক্ষে
ছিলেন।১৯০১ সালে ‘বিরোধমূলক আদর্শ’ নামে একটি প্রবন্ধ লেখেন রবীন্দ্রনাথ। বিষয় ছিল
দুই দেশ ইংল্যান্ড আর ফ্রান্সের রেষারেষির প্রসঙ্গ। ইউরোপের সংবাদপত্রের যুদ্ধবাজ ভূমিকার
কথা ছোট পরিসরে হলেও কবি উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখছেন, ব্রিটিশ চ্যানেলের দুই পারে এক
দল খবরের কাগজ সৈনিকতার রাস্তা দিয়া বর্বরতায় পৌঁছিবার জন্য ঝুঁকিয়া দাঁড়াইয়াছে।……
বিরোধ-বিদ্বেষের বাক্য লক্ষ লক্ষ ছাপা হইয়া দেশে বিদেশে বিতরিত হইতেছে। এই প্রাত্যহিক
বিষের মাত্রা নিয়মমত পান করিয়া দেশের ক্ষতি হইতেছে সন্দেহ নাই।‘’(বিরোধমূলক আদর্শ,
বঙ্গদর্শন, আশ্বিন ১৩০৮)
আজও মুক্তচিন্তার সাংবাদিক গ্রাম-শহরে হাঁটছে। আমরা সবাই অনুভব
করছি, আজও সমানভাবে প্রয়োজন আছে চিলেকোঠার ‘সত্য সন্ধানী’ সাংবাদিকের। ভারতের গণতন্ত্র
আকাশ থেকে আসেনি,।একশো বছর আন্দোলন করে শহিদের রক্তে রাঙানো যোজনের পর যোজন পথ অতিক্তম
করে তবেই আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। অর্জিত গণতন্ত্র পেয়েছি। আমরা বিচার পাইনি। ১৯৮৪তে
আমরা কি বিচার পেয়েছি? কিন্তু সংবাদমাধ্যম দায়িত্বের সঙ্গে তার কাজ করে গেছে। আমরা
বিচার পাইনি ১৯৯২ সালের পরেও। আজও ২০০২ সালের বিচার পেল না স্বাধীন ভারতের গণতন্ত্রপ্রিয়
নাগরিক। নিরপেক্ষতাবাদী সাংবাদিকরা কিন্তু প্রতিটি অমানবিক ঘনঘটার সাক্ষী থেকেছে। হাজারো
প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে সাংবাদিক, সম্পাদক, সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা ‘গ্রাউন্ড জিরো’-তে
নেমেই কাজ করে থাকেন। জীবনের সব রকমের ঝুঁকি নিয়েই এই কাজ করতে হয় সাংবাদিকদের। সংবাদমাধ্যম
তার স্বীকৃতি নতুন মোড়কে আদায় করে নিতে জানে। বিশ্বের দরবারে দাঁড়িয়ে সেই কথা আমাদের
স্মরণ করতে বললেন, যুগ্মভাবে নোবেল শান্তি পুরষ্কারজয়ী ফিলিপিন্সের মারিয়া রেসা এবং
রাশিয়ার দিমিত্রি মুরাতভ।
২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর নরওয়ের রাজধানী অসলোয় নোবেল শান্তি
পুরষ্কার নিতে এসে মারিয়া রেসা বলেন, ‘’তথ্য ছাড়া সত্য জানা যাবে না। সত্য ছাড়া বিশ্বাস
তৈরি হবে না। আর বিশ্বাস ছাড়া গণতন্ত্রের কোনও অস্তিত্ব থাকবে না।‘’ মারিয়া রেসার সঙ্গে
এ বার নোবেল শান্তি ভাগ করে নিয়েছেন রুশ সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতভ। তিনি তাঁর বক্তব্যে
প্রথমেই উল্লেখ করেন মানবাধিকার, শান্তি ও গতিশীল সমাজের প্রসঙ্গ। তাঁর বক্তব্য গণতন্ত্রের
প্রতি ভালোবাসা কমছে বিশ্বব্যাপী। একনায়কতন্ত্রের দিকেই যেন এখন বিশ্বের ঝোঁক।‘’ নোবেল
শান্তি পুরষ্কার নিতে এসে তথ্য দিয়ে সাংবাদিক মারিয়া উলেখ করেন ১৯৩৬ সালে একজন কর্মরত
সাংবাদিক নোবেল শান্তি পুরষ্কার পেয়েছিলেন। নির্ভীক, সত্যনিষ্ঠ, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী
সেই সাংবাদিক কনস্ট্রেশন ক্যাম্পে থাকার জন্য পুরষ্কার প্রাপকদের মঞ্চে হাজির থাকতে
পারেননি। মারিয়া আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেন, ‘’আমরা এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আছি। তাই বলা যেতে
পারে, আমরা একধাপ হলেও এগিয়েছি।‘’
ম্যাগসাইসাই পুরষ্কারজয়ী ভারতীয় সাংবাদিক রবীশ কুমার সম্প্রতি
দাবি করেছেন, বৈদ্যুতিন মাধ্যম(টিভি চ্যানেল)আসার পরে সাংবাদমাধ্যমের মূল্যবোধের অবক্ষয়
হয়েছে।তাৎক্ষণিক খবরের ব্যস্ততায় আমরা নীতি থেকে বিচ্যুত হচ্ছি।ন্যাকের রিপোর্ট এই
প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায়।গত কয়েক বছরে ৯১ শতাংশ কলেজের গড়পড়তা মানের থেকেও অবনমন হয়েছে।হয়ত
রবীশ কুমার সযত্নে এবং প্রযত্নে টিভি চ্যানেলের তাৎক্ষণিক খবরের প্রভাব প্রসঙ্গে ন্যাকের
উদাহারণ দিয়েছেন। অভিঞ্জ বর্ষীয়ান সাংবাদিকরা বর্তমান সময়ের মানদন্ডে দাঁড়িয়ে বলছেন,
ঘরে বসে সাংবাদিকতা নয়।বুম হাতে সাংবাদিকতা নয়। একজন অভিঞ্জ সাংবাদিকের পরামর্শ যেমন
শুনতে হবে তেমনি আবার এই সময়ের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় সহ সমাজের
প্রথমসারির লেখক, গায়ক, খেলোয়ার, চলচ্চিত্র পরিচালকদের সঙ্গে কলকাতার পথে পথে হাঁটতে
হবে। ঝা চক চকে রাস্তা থেকে নেমে সত্য উত্তর(পোস্ট ট্রুথ)কলকাতার বস্তি, উত্তর কলকাতার
অলিগলিতে ঘুরতে হবে। মানবিক আবেদনের খবর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, কলকাতার উপকণ্ঠের সহনাগরিকদের
ভিড়ে। প্রতিদিন অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন কত শত মানুষ।
‘তোমাকে অভিবাদন কলকাতা, ভয় নেই এমন দিন এনে দেব’ কবীর সুমনের
গান গুন গুন করতে করতে একবার শুনে নিতে পারি স্বর্ণযুগের একটি বাংলা গান।হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের
কণ্ঠে।‘শোন বন্ধু শোন প্রাণহীন এই শহরের ইতিকথা’………।প্রাণবন্ত শহরের পদাতিক কবি সুভাষ
মুখোপাধ্যায়ের কবিতার শরীর থেকে পড়ে নেওয়া যায়, ‘শান-বাঁধানো ফুটপাথে/ পাথরে পা ডুবিয়ে
এক কাঠখোট্টা গাছ/ কচি কচি পাতায় পাঁজর ফাটিয়ে হাসছে।’ কলকাতার নাগরিক ফুটপাথের কথা
জানতে বলছেন আমাদের অভিভাবক সাংবাদিকরা।উত্তর কলকাতার অলিগলিতে সাংবাদিকের হাতেখড়ি
হতে পারে। মূল্যবোধ গড়ে উঠতে পারে। সায়ক নাট্য গোষ্ঠীর ‘আত্মজন’ নাটক আমাদের সত্য উত্তর(পোস্ট
ট্রুথ)সমাজ চিনতে সাহায্য করে।নাট্যপরিচালক মেঘনাদ ভট্টাচার্য নির্দেশিত সাম্প্রতিককালের
মূল্যবোধ এবং আশাবাদের সেরা নাটক।
অজান্তিকে বলে নিতে চাইছি, মুম্বাই শহরের ফুটপাথের ছোট্ট একটি
ঘটনার কথা।১০ ডিসেম্বর প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গাঙ্গুলী বলছিলেন । ‘ভয়েস ফর হিউম্যান’
নামে একটি সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনাসভার বিষয়বস্তু ছিল ‘সংবিধান ও মানবাধিকার-নাগরিক
প্রত্যাশা’।গোলপার্কের রামকৃষ্ণ মিশন ইন্সটিটিউট অফ কালচার-র শিবানন্দ সভাঘরের এই অনুষ্ঠানে
প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গাঙ্গুলী বলছিলেন, রাষ্ট্রসঙ্ঘের সনদে যে অধিকারের কথা বলা
আছে। সেই অধিকার রাষ্ট্র কেড়ে নিতে পারে না।
ভারতীয় সংবিধানের ১৩ নম্বর ধারায় মৌলিক অধিকারের কথা বলা আছে। এই অধিকারকে তিনভাগে
ভাগ করা যায়। অর্থনৈতিক অধিকার, সামাজিক অধিকার ও রাজনৈতিক অধিকার। অর্থনৈতিক অধিকার
প্রসঙ্গেই তিনি মুম্বাই ফুটপাথবাসীদের এক মামলার কথা বলেন। কয়েক বছর আগে রাস্তার সৌন্দর্যায়নের
প্রয়োজনে তাঁদের উচ্ছেদ বা স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মহারাষ্ট্র সরকার।
ফুটপাথবাসীরা জীবীকার দাবিকে সামনে রেখে প্রতিরোধ গড়ে তোলে ও আদালত পর্যন্ত যায়।মুম্বাইয়ের
ফুটপাথবাসীদের পক্ষে আদালত পর্যন্ত যাওয়ার সাহস ও সামর্থ দুটোর কোনটাই ছিল না। সামনে
এগিয়ে এলেন একজন সাংবাদিক। তিনি সমস্ত কিছুর দায়িত্ব নিয়ে আড়াল থেকে তাঁদের সাহায্য
করলেন।মুম্বাই ফুটপাথের লড়াকু মানুষ সুপ্রীম কোর্টে মামলা করলেন। এবং মামলা জিতলেন
তাঁরা। সুপ্রীম কোর্টের পাঁচজন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ তাঁদের রায়ে বলেন, আমাদের সংবিধানে
২১ নম্বর ধারায় বলা আছে যে, মানুষের জীবনধারণের অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারে না। মুম্বাইয়ের
ফুটপাথের মানুষরা ফুটপাথে থাকেন, সেখানে থেকেই তাঁদের রোজগার করতে হয়। তাই তাঁদের তুলে
দেওয়া যাবে না বিকল্প ব্যবস্থা না করে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের দিন প্রাক্তন বিচারপতি অশোক
গাঙ্গুলী আরও বলেন, বর্তমান সময়ে মানবাধিকার রক্ষা করা অত্যন্ত কঠিন। শিক্ষার অধিকার
মানুষের হাত থেকে আস্তে আস্তে চলে যাচ্ছে।আমরা বলতেই পারি, মুম্বাইয়ের সাংবাদিকের সংবেদনশীলতা
শুধু ফুটপাথবাসী নয় একজন বিচারপতিও মনে রেখেছেন। নাম না জানা এমন সাংবাদিকদের ভুরি
ভুরি উদাহারণ আমাদের দেশে ও বিদেশে আছে। আমাদের গ্রাম এবং গ্রামের ভাষা জানতে হবে।
গ্রামভারত ভালো নেই। বলছেন আন্তর্জাতিকস্তরের অর্থনীতিবিদরা। গ্রাম চেনার জন্য বাদাম
কাকুর সঙ্গে সাইকেলে ঘুরতে হবে সাংবাদিকদের।গ্রাম চেনার জন্য আমরা সাংবাদিকের খেরোর
খাতা খুলে হাসান আজিজুল হকের উপন্যাস, গল্পে একবার উঁকি দিয়ে নিতে পারি। উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত
সদ্য প্রয়াত হাসান আজিজুল হক অভিজাত মানুষ হলেও লেখক হিসেবে তিনি ছিলেন ‘নামহীন-গোত্রহীন’
সম্প্রদায়ভুক্ত এক লেখক। যিনি মাটির আল ধরে হাঁটতে হাঁটতে সাহিত্যের আঙিনায় এসেছিলেন।
সারা জীবন থেকে গেছেন সেই আল পথের সীমানায়। মানুষ বলতে তিনি নিজে বুঝতেন, চিনতেন এবং
বলতেন, মানুষ হবে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও পরিপূর্ণতর একজন মানুষ।
সংবাদপত্র বা গণমাধ্যম বলতে মানুষ যেটা বোঝে সেই সংবাদপত্রের
পথ চলা শুরু হয়েছিল উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে। বৃহৎপুঁজি নির্ভর সংবাদপত্রের পাঠক সংখ্যা
এবং প্রচারসংখ্যা উত্তরোত্তর বাড়তেই থাকে। এর মূল কারণ বৃহৎ বাণিজ্যিক গোষ্ঠী তথা কর্পোরেট
সংস্থা সংবাদমাধ্যমগুলির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়েছে। ফলত স্বাধীনচেতা, সত্যনিষ্ঠ,
নির্ভীক সংবাদপত্রের মালিকদের পক্ষেও সংবাদমাধ্যমের এথিক্স মেনে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া
অত্যন্ত কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবু সংবাদমাধ্যমের পেশাদার সাংবাদিকদের সংগঠন,
ব্যক্তিগত সাংবাদিকতার সংগঠন বা একজন সাংবাদিকের নিজ নিজ ‘কোড অব এথিক্স’(Code
of ethics) ভিন্ন ভিন্ন থাকতে পারে।তবে প্রত্যেকের কাছে প্রাথমিকভাবে
নীতি হওয়া উচিত সত্যনিষ্ঠ, নিখুঁত, বিষয়মুখী, ন্যায়পরায়ণ, নিরপেক্ষ। এবং যে খবর আমি
করছি তার জন্য কৈফিয়ত দিতে বাধ্য থাকা অথবা দায়িত্ব নেওয়ার মানসিক প্রস্তুতি থাকা।
এই নীতিই আমাদের সাহসী ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার সহজপাঠ শিখতে বলে। সাংবাদ মাধ্যমের পাঠ্যসূচীতে
যে নিয়ম মানতে বলা হচ্ছে, প্রত্যেক সম্পাদক, সাংবাদিক, ডেস্কের কর্মী যে নীতি, নিয়ম-শৃঙ্খলা
মেনে চলেন পরবর্তী প্রজন্মকেও সেই ধারা মেনে চলতে হবে। নীতি হিসেবে একটি বিষয়ে জোর
দেওয়া হয়েছে, নিজেদের অফিসের সহকর্মী সাংবাদিকের খবরকে নৈতিকভাবে ক্ষতি না করা। অথবা
ভিন্ন সংস্থার বন্ধু সাংবাদিককেও ভুল খবর দিয়ে বিভ্রান্ত না করা। প্রতিযোগিতার বাজারেও
এই নিষ্ঠা গড়ে তুলতে আমাদের মানসিক শক্তির
প্রয়োজন হবে।
সংবাদমাধ্যমের কাছে দায়বদ্ধ কর্মী হিসাবে প্রত্যেককে শিখতে
হয় একজন ‘ভুয়ো সংবাদ’ পরিবেশন করা সাংবাদিকের সঙ্গে তাঁর সংস্থার সাহসী, নির্ভীক অকুতোভয়
সাংবাদিক মানুষের কাছে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য এবং দায়বদ্ধ। হলুদ সাংবাদিকতার প্রতিনিধিত্ব
করে যে সাংবাদিক দিনের শেষে তাঁর সম্মান বলে কিছু থাকেনা। ভারতীয়রা অত্যন্ত সহনশীল
ও সহিষ্ণু। সম্মান ও আত্মসম্মান আমাদের জন্মগত অধিকার। আমাদের দেশের সংবিধান সেই সম্মান
বা ডিগনিটি দিয়েছে। আমাদের দায়িত্ব নিয়ে বলতে হবে, সম্মান, মর্যাদা ও আত্মসম্মানের
জন্যই সংবাদমাধ্যমের মঞ্চে আমরা আসীন হয়েছি। গণতন্ত্র সেখানেই থাকে যেখানে জনগণের হাতেই
সব শক্তি।
Comments
Post a Comment