আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য পৃথিবী চাই




দীপেন্দু চৌধুরী

ম্যানমেড বন্যা বলে কি কিছু হয়? ‘ম্যানমেড বন্যা’ শব্দবন্ধ শোনা যাচ্ছে এক দশকের বেশি সময় ধরে।ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গ।এই রাজ্যে বামফ্রন্ট(১৯৭৭-২০১১)আমলে তৎকালীন বিরোধী দলের নেত্রী বর্তমানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই দাবি করেছিলেন। আমরা মনে করতে পারছি ১০-১২ বছর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোলা এই দাবি নিয়ে হাসি ঠাট্টাও হয়েছে।এবং এখনও হচ্ছে। সাংবাদিকতার সুবাদে তৎকালীন রাজ্য সরকারের প্রধান সচিবালয় মহাকরণে বসে আমরা হাসি ঠাট্টা শুনেছি। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে অতি বর্ষণের জন্য বিভিন্ন জেলায় মানুষ জলবন্দি হয়ে জলযন্ত্রণা ভোগ করেছেন। কলকাতা সহ কলকাতার উপকন্ঠের বিভিন্ন এলাকায় মানুষের জলজন্ত্রণা প্রতি বর্ষায় সহ্য  করতে হয়। পরিকল্পিত ও অপরিকল্পিত উন্নয়ন কি এর অন্যতম কারণ? সুন্দরবন অঞ্চলের মানুষ ‘জলবন্দি’ থাকতে থাকতে এই ব্যবস্থাকে অনেক ক্ষেত্রে নিয়তি হিসাবে মেনেই নিয়েছেন। এই বছর হুগলীর খানাকুল, তারকেশ্বর সহ বিভিন্ন বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী।সেই সময় তিনি সংবাদ মাধ্যমকে আবারও বলেন, এই বন্যা ‘ম্যানমেড’  বন্যা। মমতা রাজ্যের পুরনো জলাধারগুলির সংস্কারের দাবিও জানান।‘ম্যানমেড বন্যা’ আদৌ কি হয়? না সম্ভব? নদী বিশেষঞ্জ কল্যাণ রুদ্রের সদ্য-প্রকাশিত বই ‘দুই বাংলার নদীকথা’-য় তার কিছু ব্যখ্যা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে।

রাজ্যের অন্যতম নদী দামোদর।ভুগোলবিদদের অভিমত, ঔপনিবেশিক আমলে দামোদর নদীকে ‘বাংলার দুঃখ’ নামে চিহ্নিত করেছিল ব্রিটিশ সরকার। কারণ দামোদর নদীর উপকূলবর্তি অঞ্চলে ঘন ঘন বন্যা হত। নদীর ইতিহাস থেকে জানা যাচ্ছে, ঊনবিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে বন্যা প্রতিরোধ করার পরিকল্পনার নামে দামোদর নদীর পাঁড় বেঁধে দেয় তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার।রাজস্বের ক্ষতি যাতে না হয় সেই উদ্দেশ্যেই ছিল সরকার বাহাদুরের এই পরিকল্পনা।কল্যাণ রুদ্রের দুই বাংলার নদীকথা গ্রন্থে বিষয়টার উল্লেখ রয়েছে। তিনি লিখছেন, এই পাড় বেঁধে দেওয়ার কারণে গাঙুড়, বেহুলা, কানা দামোদরের মতো সাতটি শাখানদী প্রধান দামোদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যহত হয় ওই সব শাখা নদীর। আমাদের ছোট নদী চলে আঁকে বাঁকে-র প্রবাহ বাঁধাপ্রাপ্ত হওয়ায় দামোদর ফুঁসতে থাকে। পরিণাম হুগলীর খানাকূল, তারকেশ্বরের মতো এলাকা প্রতিবছর বন্যার কবলে পড়ছে।কয়েক দশক ধরে টানা বন্যার কবলে পড়তে থাকে এই সব অঞ্চল। অবিরাম বর্ষার জল নিজের পথ নিজেই খুঁজে নেয়।তৈরি হয়ে যায় মুন্ডেশ্বরী নামে নতুন এক নদী।

একটি জনপ্রিয় বাংলা গানে আছে ‘নদীর এ কূল ভেঙে ও কূল তুমি গড়’। নদীমাতৃক সভ্যতায় কোনও নদীর মৃত্যু হয়েছে। নতুন নদীর জন্ম হয়েছে।নদীর একূল ভেঙে ও কূল গড়ে উঠেছে। একটি উদাহারণ দেওয়া যেতে পারে, খ্রীস্টপূর্ব শতক থেকে বাংলার প্রাচীন সভ্যতার একাধিক নিদর্শন পাওয়া গেছে।প্রাচীন ভাগিরথীর শাখা নদী বিদ্যাধরী নদী খাতের নিদর্শনের কথা বিভিন্ন নৃতত্ত্ববিদ ও ইতিহাসবিদরা বলে গেছেন।ঐতিহাসিক নীহাররঞ্জন রায়ের বই থেকে পাওয়া যায়, ৩০০-৫০০ অব্দ পর্যন্ত বিদ্যাধরী নদী দিয়ে আন্তর্জাতিক ব্যাবসা-বাণিজ্য চলত। বিদেশী বণিকরা বিদ্যধরী নদীপথেই অবিভক্ত বাংলায় আসতেন। প্রাকৃতিক কারণ ও অপরিকল্পিত জনবসতি গড়ে ওঠার জন্য বিদ্যাধরী নদী মজে যেতে থাকে। সেই নদীর শাখা প্রশাখা বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নামে পরিচিত হতে থাকে। যেমন, হাড়োয়ার উত্তরে গুমা পর্যন্ত নদীটি সাবেক নাম ‘বিদ্যাধরী’ নামেই পরিচিত।দক্ষিণ ২৪ পরগণার ক্যানিং-এর কাছে বিদ্যধরী নদী, মাতলা নদীতে এসে মিশে গেছে। অবলুপ্ত বিদ্যাধরীর শাখা নদী গুমা থেকে হরিণঘাটা অঞ্চলে নোনা গ্যাং নামে পরিচিত।             

পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জলাধার বা ড্যাম্প ডিভিসি। কল্যাণবাবু বইয়ে ব্যাখ্যা করেছেন, দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও ঔপনিবেশিক রূপরেখা মাথায় রেখেই গড়ে ওঠে ডিভিসি নামক জলাধার।এই ব্যাখ্যা থেকেই আমরা পাই, ডিভিসি তৈরির সূচনা পর্বেই ছিল গোলমেলে পদ্ধতি। রাজ্যের উচ্চ অববাহিকায় চার চারটে জলাধার নির্মাণ করলেও রাজ্যের দক্ষিণ প্রান্তের বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। এই চারটে জলাধারের কারণেই দক্ষিণবঙ্গের বিরাট একটি অংশ বন্যা কবলিত এলাকা হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে। বৈঞ্জানিক সত্য হিসাবে আমরা জানি তবু কল্যাণবাবু বিস্তারিত ব্যাখায় লিখেছেন, জলাধারগুলি দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে জলাধারে পলির স্তর জমে গেছে।এই জন্য জল ধরে রাখার ক্ষমতাও কমে গেছে।বর্ষার সময় ভারী বর্ষণে জলাধারের জল উপছে উঠছে।কল্যাণবাবু নদী বিষয়ক তাঁর বইয়ে যুক্তি দিয়ে দেখিয়েছেন, ডিভিসি ৩০ হাজার বা ৫০ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার হিসেব দেয়।কিউসেক-র মানে, এক সেকেন্ডে কত কিউবিক ফিট বা ঘনফুট জল ছাড়া হয়।নদী বিশেষঞ্জ কল্যাণবাবু দাবি করেছেন কতক্ষণ ধরে জল ছাড়া হচ্ছে, তার সামগ্রিক হিসেব দরকার। বিশেষঞ্জের অবস্থান থেকে তাঁর অভিমত তথা প্রস্তাব, কত পরিমাণ জল ছাড়া হলে তা কোন কোন এলাকায় কোন সময়ে পৌঁছবে এবং সামগ্রিক ভাবে জলস্তর কতটা বাড়বে, সেই হিসেব নির্দিষ্ট করার দায়িত্ব জলাধার কতৃপক্ষকে নিতে হবে। এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরকে জানাতে হবে। কল্যাণবাবুর বক্তব্য থেকে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, জলাধার কতৃপক্ষের উদাসীনতা বছর বছর বন্যা হওয়ার অন্যতম কারণ না হলেও একটি কারণ।  

ডিভিসির প্রতিনিধি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, জলাধারের সুরক্ষার দায়িত্ব ডিভিসি কতৃপক্ষের। তাই প্রাক বর্ষায় প্রতিটি জলাধারের নিয়ম করে পলি সাফ করা হয়।তাঁদের যুক্তি ১৯৫০ সালে জলাধার নির্মাণের সময় যে রূপরেখা তৈরি হয়েছিল তাতে বলা হয়েছিল আড়াই লক্ষ কিউসেক পর্যন্ত জল ছাড়তে পারবে ডিভিসি। ৭০ বছর আগের পরিকল্পনা বর্তমানে আর কাজ দিচ্ছে না। কতৃপক্ষের বক্তব্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে। ডিভিসির প্রতিনিধি জানাচ্ছেন, গত ৭০ বছরে নদীর উপকন্ঠে(সংলগ্ন এলাকায়) ঘন জনবসতি গড়ে ওঠার জন্য দেড় লক্ষের বেশি জল ছাড়লেই বন্যা হচ্ছে। ডিভিসি-র খবর, এই বছরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধারে প্রায় ১৬ লক্ষ একর ফুট জল জমেছিল। সেখানে জল ছাড়া হয়েছে মাত্র তিন লক্ষ একর ফুট। কারণ কয়লার খনি ও জমির সমস্যা থাকার জন্য দুই জলাধারের ধারণ ক্ষমতা নতুন করে আর বাড়ানো সম্ভব নয়।

প্রশ্ন উঠছে তা হলে মানুষের তৈরি সত্তর বছরের পুরনো জলাধারের জন্য সংলগ্ন জনবসতি বছরের পর বছর প্লাবিত হবে? মানুষ প্রতি বছর ভিটেমাটি খুইয়ে ঠাঁইনাড়া হয়ে উদবাস্তু হয়ে ঘুরে বেড়াবে? নতুন একটি জলাধার তৈরি করার পরিকল্পনা ডিভিসি কতৃপক্ষের ছিল। সেইমতো তাঁরা ২০১২ সালে একটি রূপরেখা তৈরি করেও ফেলেছিল।মাইথন থেকে ৬০ কিলোমিটার উত্তরে ঝাড়খন্ডের বলপাহাড়ি জলাধার নির্মাণের জন্য বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি হয়ে পড়ে আছে। ঝাড়খন্ড সরকারের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি না পাওয়ার জন্য ডিভিসি কতৃপক্ষ কাজ শুরু করতেই পারছে না। বোকারোর কাছে আরও একটি নতুন জলাধার তৈরির প্রস্তাব উর্ধতন কতৃপক্ষের কাছে ঠান্ডা ঘরে পড়ে আছে। রাজ্য এবং কেন্দ্রের সমন্বয়ই এর অন্যতম কারণ?

নতুন নতুন জলাধারের প্রয়োজনীয়তা আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় আরও বেশি করে অনুভূত হচ্ছে। সেচের জল দেওয়ার কাজ সাবেকি ব্যবস্থা হলেও আধুনিক শিল্পনগরীতে জলের প্রয়োজন হয়। বিদ্যুৎকেন্দ্র, কয়লা খনির জন্যও জলাধারের সঞ্চিত জল ব্যবহার করা হয়। এখন প্রশ্ন উঠছে বন্যা কী করে আটকানো যাবে? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা দিয়ে লেখা  শুরু করেছিলাম। তিনি রাজ্যের তৃতীয় দফার তৃণমূল সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বলেছেন, ‘এই বছর দক্ষিণবঙ্গে ৩১ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এটাও আমাদের রাজ্যে বন্যা হওয়ার অন্যতম একটা কারণ।’ বন্যা আটকাতে মজে যাওয়া ছোট নদী, খাল সংস্কার করে দামোদর সহ অন্যান্য বড় নদীকে জুড়ে দিতে হবে। আমাদের বক্তব্য একটা রাজ্য কেন্দ্রিক নয়।আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরে রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন(COP26) চলাকালীন প্রসঙ্গটা আমরা জাতীয় তথা আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছে দিতে আগ্রহী।

উন্নয়ন বনাম প্রকৃতির ক্ষয়ক্ষতিঃ আমাদের দায়িত্ব 

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ নামক রাজ্যের উত্তর দিকে(উত্তরবঙ্গ)বৃষ্টির প্রাবল্য গত কয়েক বছর ধরে বেড়েই চলেছে।খুব স্বাভাবিক ভাবেই ধসের প্রবণতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এতদিন বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল উষ্ণায়ন  । করোনাকালে অতি বৃষ্টি বিশ্বজলবায়ু পরিবর্তনের আন্তর্জাতিক ডেস্কে জায়গা করে নিয়েছে।সম্প্রতি একটি অনলাইন মতবিনিময় আলোচনাসভা থেকে বিষয়টি আরও বিস্তারিত জানা গেল। শুধুমাত্র বেশি বৃষ্টি হওয়া ধস নামার একমাত্র কারণ নয়।সম্প্রতি উত্ত্রাখন্ডের প্রবল বন্যা, জলোচ্ছাসে কয়েকজন পর্যটক ও পর্বতারোহীর মৃত্যু আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে সমস্যার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। উত্তরাখন্ড থেকে উত্তরবঙ্গ, হিমাচলপ্রদেশ সহ প্রত্যেকটা পাহাড় বেষ্টিত জনপদ অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অতি বৃষ্টির জন্য ধস নামছে এই কারণটা একমাত্র কারণ নয়।তাঁরা জানিয়েছেন, পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় কেটে, গাছ কেটে তথাকথিত উন্নয়নের কাজ হচ্ছে। পাহাড়ি অঞ্চল প্রকৃতির রোষে পড়ছে। তাই ধস নামার প্রবণতা বাড়ছে। দুর্ঘটনাও আগের তুলনায় বেড়েছে।উন্নয়ন বনাম প্রাকৃতিক দুর্যোগে ভারত সরকারের ভূমিকা কী? বিঞ্জান মঞ্চ নামে একটি অসরকারি সংস্থা সূত্রে জানা গেল, জীববৈচিত্রকে আমল না দিয়ে অরণ্য সংরক্ষণ আইন পরিবর্তন করতে চাইছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। দেশের সর্ব বৃহৎ জনবিঞ্জান সংগঠনের অভিযোগ, গত ২ অক্টোবর গাঁন্ধিজীর ১৫৩তম জন্মদিবসে ভারত সরকার ‘ফরেস্ট কনজারভেশন অ্যাক্ট’, ১৯৮০ আইনের নতুন কিছু সংশোধনীর সুপারিশ করে সংশোধীত আইন আনতে চাইছে।

ফরেস্ট সার্ভে অব ইন্ডিয়ার তথ্য বলছে, ভারতে অরণ্যের পরিমাণ ২১.৬১ শতাংশ। বনাঞ্চলের বাইরে বৃক্ষ আচ্ছাদনের আওতায় থাকা অরণ্য ধরলে এই পরিমাণ হবে সর্বাধিক ২৪ শতাংশ। ভারত আগেই প্রতিঞ্জাবদ্ধ আছে, দেশে ন্যুনতম ৩৩ শতাংশ বনাঞ্চল তৈরি করবে। ২০১৫ সালে প্যারিস জলবায়ু আলোচনায় যে প্রতিশ্রুতি(এনডিসি) দিয়ে রেখেছে। এই প্রতিঞ্জাপত্রে ঘোষণা করা আছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে বৃক্ষ আচ্ছাদন বৃদ্ধি করবে ভারত। এবং ২৫০-৩০০ কোটি টন কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণের ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য সমস্ত প্রস্তুতি নেবে ভারত।

পশ্চিমবঙ্গ বিঞ্জান মঞ্চ নির্দিষ্ট অভিযোগ করে জানাচ্ছে, এই সংশোধনীর মাধ্যমে বায়ুমণ্ডলের কার্বন শোষণ, জীব বৈচিত্রের রক্ষা ও দেশের ৪০ কোটি মূলবাসী-আদিবাসী তথা বনবাসীদের এক আইনের আওতায় আনতে চাইছে সরকর।এক কথায় সংগঠনের বক্তব্য, এই আইনের ক্ষমতার বলে অরণ্যের অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে কেন্দ্র।দেশের অরণ্য যে হেতু সংবিধানের যৌথ তালিকাভুক্ত সেই হিসাবে রাজ্য সরকার ও সাধারনের মতামতের জন্য সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল মাত্র ১৫ দিন। যে সময়সীমা পেরিয়ে গেছে। নতুন সংশোধিত অরণ্য আইন কি পারবে উন্নয়ন বনাম ধস, উন্নয়ন বনাম বন্যা, উন্নয়ন বনাম অরণ্যের অধিকারের সমস্যা খুঁজে বার করতে? কেন্দ্রীয় সরকার কী পারবে সমাধানের রাস্তা খুঁজে দিতে? বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনে ভারত কতটা আগ্রহী সেই বিষয়ে দেশের পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবের একটি সাক্ষাৎকার আমাদের সাহায্য করতে পারে। ‘দ্যা হিন্দু’ পত্রিকার সাংবাদিক জ্যাকব কোশি ২৬ অক্টোবর পরিবেশমন্ত্রীর   একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। সেই সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক জ্যাকবের প্রথম প্রশ্ন ছিল ভারত কেন ‘নেট জিরো’ টার্গেটে আগ্রহী নয়? পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব উত্তরে বলেছেন, ‘’ভারত সরকার বর্তমান শতাব্দীর মাঝামাঝি নাগাদ এই টার্গেটে পৌঁছতে পারবে। আমার সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, ‘কমন বাট ডিফারেনসিয়েট’ দায়িত্ব পালন করা। দেশ কোনরকম ভাবেই জীবাশ্ম জ্বালানীকে এড়িয়ে জলবায়ু সমীকরণের কথা ভাবছে না।‘’ 

আমরা যতদূর জানি স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় জলবায়ু সম্মেলন(সিওপি২৬)-এও অন্যতম বিষয় জলবায়ু পরিবর্তনকে মানিয়ে নিয়েই উন্নয়নমূলক কাজ করতে হবে।আগামীতে ভারত সরকারের ভূমিকা কী থাকে সেটাই এখন দেখার।                                                                  

 

Comments

Popular posts from this blog

দু’জন বাঙালি বিঞ্জানীর গণিতিক পদার্থ বিঞ্জানে বিশ্ব বিখ্যাত আবিষ্কার

‘ইউনিভার্সাল রিলিজিয়ন’ ও ভারতীয় সাধারণতন্ত্র

লোকসভা অধিবেশন শুরুর পরেই কি ধর্মঘট প্রত্যাহার?