শরৎ স্মৃতির ভেজা মাটির ছন্দ চেনা কবিতা





দীপেন্দু চৌধুরী

এখন নম্বর জেনে গেছে সত্যেন।স্মার্টফোনের নম্বর নয়। কলকাতার উপকণ্ঠে শহরতলির যে বাড়িতে থাকে ও সেই বাড়ির নম্বর, ১২/এ সিধু কানু লেন। সত্যম গঞ্জ শহরে যখন থাকত তখন বাড়ির নম্বর বলে কিছু ছিল না।বাড়ির মোড়ল গোছের কারও নাম দিয়ে সবাই বাড়ি চিনত। ঠিকানা খোঁজা মানে আগে পাড়ার নাম বলতে হবে। তারপর বাড়ি কর্তার নাম বললেই গ্রাম বা গঞ্জের লোক পথ চিনিয়ে দেবে। নগর সভ্যতার অধিকারে দৈর্ঘে প্রস্তে হাত পা ছড়িয়ে সত্যেনদের শহরের রাস্তার সংখ্যা বেড়েছে।জনসংখ্যা বেড়েছে।রাস্তার ধারের ল্যাম্প পোষ্টের টিম টিমে আলোগুলো স্পর্ধিত স্পর্ধায় রাস্তা আলোকিত করে দাঁড়িয়ে আছে।জানান দিচ্ছে সভ্যতার বিকাশের। দোকানগুলির ভরা যৌবন এসেছে। ঝলমলে আলোয় গারমেন্ট শপের মডেলের নিতম্ব জানান দিচ্ছে উছলে ওঠা যৌবনের উচ্ছাস। ওদের শহরে আধুনিক সভ্যতার ‘মল’ হয়েছে। সত্যেনের কাছ থেকে শুনেছি, ওদের গঞ্জ শহরে গত দশ বছর আগে সত্যেনকে যেতে হয়েছিল। সত্যেনের ভাষায় গঙ্গাজলে না মানে ‘ব্রাহ্মনী’ নদীর হাঁটু জলে শেষ ডুবস্নান দিয়ে কলকাতা ফেরা।কারণ দেশের মাটির বাড়িটা লোলুপ ছোট দাদা, ভাইপোদের ষড়যন্ত্রে বিক্রি করে দিতে হয়েছে। দু’টো ঘরের মাটির বাড়িটা কেউ না থাকায় খন্ডহরে পরিণত হয়েছিল। বাবা মায়ের পূর্ববঙ্গের স্মৃতিবিজড়িত অ্যান্টিক সব চুরি হয়ে গেছে। কত বই, সত্যেনের সম্পাদিত লিটল ম্যাগাজিন, নিজের লেখা গল্পের খসড়া সব মাটির নীচে চাপা পড়ে গেছে। বছরের পর বছর বর্ষার শাসন মানতে পারেনি প্রৌঢ় বাড়িটার কাঠামো। একদিন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে যায়।বাড়িতে পুরনো আসবাব সহ যা কিছু ছিল সব সলিল সমাধি।  

গত দশ বছর আর যাওয়া হয়নি। দশ বছর আগে গিয়ে চেনা শহরটাকে কেমন যেন ভিনদেশী তারা মনে হয়েছে।খর বৈশাখের সন্ধ্যেয় এক ফালি চাঁদের আলোয় দুই বন্ধুর সঙ্গে টিলার উপর বসে ছিল সত্যেন। কাস্তের মতো চাঁদ দেখে সত্যেনের মনে হয়েছিল এক ‘নবান্ন’ উদযাপনের কথা।

কত আর বয়স ওর তখন? ১৩ কি ১৪ বছর। বাড়ির বাইরে সীমানা প্রাচীরের মাটির দেওয়ালে কাস্তে হাতুড়ির ছবি আঁকা ভোটের স্লোগান। উল্টোদিকের প্রতিবেশীদের বাড়ির দেওয়ালে কাঁচা হাতে লেখা ‘সত্তর দশক মুক্তির দশক’। ‘বন্দুকের নলই ক্ষমতার উৎস’। ইত্যাদি। আদিবাসী পাড়ার মাটির দেওয়ালে ‘গাই বাছুর’ আঁকা ভোটের স্লোগান। রঙ চটা পুরনো দেওয়ালে চরকার ছবি আঁকা নির্বাচনী স্লোগান লেখা রয়েছে।সত্যেন একা থাকলেই আমাকে এ সব বলে। বলে কেমন যেন মজাও পায়। আসলে ওর মধ্যে কবিতা ছিল। হয়ত গদ্য কবিতা আজও আছে। প্রেম ছিল, বন্ধুত্ব ছিল, আত্মীয়তা ছিল। সত্যেনের কলেজের একটি মেয়ে খুব কাছে এসেছিল। পরস্পরের বই দেওয়া নেওয়ার অন-আনুষ্ঠানিক সৌজন্য ছিল। বাড়ির অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার জন্য সত্যেন সব বই কিনতে পারত না। কেউ নয় কেন যেন পাহাড়ি ঝরনার মতো তির তির করে এগিয়ে এসেছিল ইপ্সিতা। সত্যেনকে বলেছিল, আমার কাছ থেকে বই নিয়ে পড়বে তুমি। শ্যামলা গাঁয়ের শ্যামলা মেয়ে।পাহাড়ি গ্রামের সবুজ ঘেরা প্রকৃতির সারল্য ছিল ওর মধ্যে। বুদ্ধিদীপ্ত কালো চোখ দু’টো জ্বলজ্বল করছে। পাহাড়ি নদীর ধারে আট কাঠা জমির উপর ওদের করোগেটের টিনের তিন তলা মাটির বাড়ি। ছোট নাগপুরের পাহাড় সংলগ্ন ইপ্সিতাদের গ্রামটা বড় বড় শাল, সেগুন, মহুল গাছের সবুজে ঘেরা। লাল মাটির পাহাড়ি রাস্তা। বাড়ির উঠোনে ধানের গোলা। গোয়ালে দুধেলা গাই, বলদ। ওদের প্রায় ৪০ বিঘা আবাদি জমি ছিল। সারা বছর চাষ হত। ধান-গম ছাড়াও মরশুমি সবজি। জোতজমি অনেক ছিল। অঢেল ছিল। বাবার এক মেয়ে ইপ্সিতা।বাড়িতে দুর্গা পুজো হত।কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে সত্যেনের একবার পুজোর সময় ওদের বাড়ি যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। সত্যেন ওর কাছে কলেজের পাঠ্যপুস্তক নিয়ে পড়ত। ইপ্সিতা বিনিময়ে সত্যেনের কাছ থেকে সাহিত্যের বই নিয়ে পড়ত। কারণ সত্যেনদের গঞ্জ শহরের লাইব্রেরীটা ছিল বাংলা সাহিত্যের বইয়ে ঠাসা।

সত্যেনদের আড়াই কাঠার মাটির বাড়িটা তখনও হয়নি। রেল স্টেশনের লাগোয়া একটা পাড়ায় ওরা ভাড়া থাকত। পাথরের পুরু ইটের রাস্তা। সত্যেনের ভাষায় ‘আমার পাথুরে স্মৃতি।’ তখন ওদের বাড়িতে ইলেকট্রিক আলো ছিল।নিজেদের মাটির বাড়িতে সত্যেনের বাবা বিদ্যুৎ বাতির কানেকশন নিতে পারেননি। ভেজা মাটির স্যাঁতস্যাঁতে দু’কামরার বাড়ি ওর কাছে আজও ভেজা মাটির ছন্দ চেনা গদ্য কবিতা।সত্যেনের এক বন্ধু তাঁদের বাড়িতে ‘নবান্ন’-র আমন্ত্রণ জানিয়েছিল।মাত্র ১৩-১৪ বছর বয়স ওর। ‘নবান্ন’ বিষয়টা কি ও জানত না।গ্রামের বর্ধিষ্ণু বাড়িতে নতুন ধান তোলার সময় নবান্নের অনুষ্ঠান হয়। একটু বড় হয়ে সত্যেন ‘নবান্ন’ যুগের কথা জানবে। আইপিটিএ আন্দোলনের ইতিহাস পড়বে। কারণ সত্যেন পাঠচক্রের ছাত্র ছিল। বিজন ভট্টাচার্যের নবান্ন নাটক আজ ইতিহাস। রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক দফতরের বাড়ির নাম বর্তমানে ‘নবান্ন’।

কিছুদিন আগে সত্যেন এই বছর অতিমারির আবহে আমাদের বাড়ি এসেছিল। দু’ডোজ টিকা নেওয়া আছে ওর। আমি প্রবীণ নাগরিক হওয়ায় আমার আগেই নেওয়া হয়েছে। পুজোর আগে বলে পুজো নিয়েই আমাদের আড্ডা হল। সত্যেন বলছিল, জান করোনা আবহে আমি দোকান বাজার যাচ্ছিলাম না। বাড়িতে ব্যবহার করা চটিটার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিল। একটা চটির প্রয়োজন। আমার নাতনি ক্লাস টেনে পড়ে, ও একটা সাদা কাগজে আমার পায়ের মাপ পেন্সিল দিয়ে দাগ দিয়ে দোকানে চলে গেল। আমার চটি নিয়ে এল। আমি হেসে বললাম, পুজোর সময় কম বয়সে তোর বাবার পায়ের ছাপ নিয়ে এই ভাবে চটি কিনতে হত আমাদের।

সত্যেন স্মৃতি মন্থন করে বলল, সে এক মজার ব্যাপার, পুজোর আগে বৃষ্টি হলে মাটির বাড়ির উঠোন ঘরের মেঝে ভিজে ভিজে স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে থাকত।বাড়ির মেঝে থেকে বিন্দু বিন্দু ঘামের মতো জল উঠত।পুজোর নতুন সস্তার প্যান্ট ঘরের মেঝেয় দাঁড়িয়ে পরতে পারতাম না। চৌকির উপর উঠে আমাদের নতুন প্যান্ট পরতে হত। আমি অত্যন্ত মজা পেতাম।শরতের শিউলি, সকালে ঝরে গেলেও সবুজ পাতার ডাল থেকে একটা দু’টো দেখা যেত। আমি চৌকিতে দাঁড়িয়ে নীল আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে থাকা শিউলি গাছটা ঘর থেকে দেখতাম। পাশে পিয়ারা গাছে বাদুড়ে খাওয়া পাকা পিয়ারা ঝুলছে। উদোম গায়ে গাছে উঠেছে পাড়ার একটা ছেলে। ১২-১৩ বছরের ছেলেটাকে জিগ্যেস করতাম, গদাই আজ সকালে কি খেয়েছিস? ষষ্ঠীর সকাল। গদাই বলত, মা বাবুর বাড়ি গেলছিল। সকালের কাজ করতে। বাবুরা খানিক বাসি ভাত আর সকালের আলু ভাজা দিয়াছে সতুদা। ওই খেলাম। আজ ষষ্ঠী মাছ মাংস খেতি লায়।

সত্যেন তখন কলেজের ছাত্র। বাবার তৈরি মাটির বাড়িটায় সত্যেন দশ বছর ছিল। রেল লাইন টপকে হাওড়া স্টেশনে নেমে কলকাতায়। পায়ে হেঁটে, পায়ে হেঁটে কলেজ স্ট্রীট আসার আগে। বই পাড়া খুব টানত ওকে।আজও এক অমোঘ  টানে কলেজ স্ট্রীট চলে যায় ও। কলকাতা শহর কেন কোনও শহরের বস্ত্র বিপণি আজও চেনে না সত্যেন। কিন্তু লিটল ম্যাগাজিন, সমস্ত বইয়ের দোকানের ঠাঁই ঠিকানা জানে ও। কলকাতার বাড়িতে পুরনো পত্রিকা আর বইয়ে ঠাসা। সত্যেন এক সময় গ্রিটিংস কার্ডের কবিতা লিখত। সিল্ক স্ক্রিনে প্রিন্ট করিয়ে বন্ধুদের উপহার দিত। শারদীয় শুভেচ্ছা, দীপাবলীর শুভেচ্ছা ও জন্মদিনের শুভেচ্ছার গ্রিটিংস কার্ড ছেপে বন্ধুদের দিত। আমাকেও ডাকযোগে পাঠাত। ১৪০৮ সালের একটা কার্ডের প্রচ্ছদে ওর কবিতা। ‘কোন মানুষ তার শিশুকে—/ আর আমার কোলে দেবে?/ ওগো কলকাতা তুমি সৌজন্য ভাঙ—/ তোমার আদিম সৃষ্টির বাস্তবতায়’

পত্র উপত্যকা-৩  

আমরা জানি সত্যেন ভাইপোদেরকে যে ভাবে মানুষ করেছে। সেটা তারা ভুলে গেলেও সত্যেনকে কখনও আক্ষেপ করতে শুনিনি।ভাইপোরা কলকাতা শহরে তথাকথিত আর্থসামাজিক মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত। এটাই ওর কাছে শান্তনা। গত দু’টো দশকে পারিবারিক বন্ধন খান খান হয়ে গেছে।গত দু-দু’টো দশক প্রায় একরকম সমাজবিচ্ছিন হয়ে থাকতে হচ্ছে সত্যেনকে। এই মর্যাদা ওর কাছে গ্রাম্যতা আর সততার নাগরিক পুরষ্কার মনে হয়। সত্যেন হাসে আর বলে কলকাতা তোমায় নমস্কার।কলকাতা তোমায় অভিনন্দন। পুজোর সময় আমার অঢেল সময়। সত্যেনের চিঠির ফাইল ঘাটছিলাম। এই লেখায় তার থেকে দু’টো চিঠি তুলে দিলাম। একটা ওকে পাঠানো ওর ছোড়দার প্রথম পক্ষের বড় ছেলে ঝিলমের   লেখা। ৭৫ পয়সার ইনল্যান্ড লেটারে লেখা চিঠি।

১০/৭/৯৫

প্রিয় কাকু,

৯ তারিখ যাওয়ার কথা ছিল কিন্তু যাওয়া হল না। যদি সম্ভব হয় ঠাকুমাকে নিয়ে পরে যাচ্ছি। যাবার আগে চিঠি দেব। বাপী, বর্ধমানে বদলি হয়েছে।বাপী G.R.P.-তে জয়েন্ট করার পর আমি নলপুরের বাড়িতে চলে আসি। এতো গেল চলমান জীবনের বাঁধাধরা খবর। এবার আমার যাবার কথা। বাপী, ঠাকুমা কেউ আমাকে কলকাতা যেতে দিতে চাইছে না। সবার এক কথা ভবিষ্যৎটা তো শেষ করেছি তাকে আরও শেষ করা কেন? বাপী বলছে, ‘’সম্পর্কের শেষ করা সুতো কাটতে চাইলে যেখানে খুশি সেখানে যাও।‘’ ঠাকুমার কথা, ‘’এখন যেতে হলে তোমার বাবা-মার মতামত লাগবে। তারপর দুদিন পর আবার বাপের ঘাড়ে চাপবে এভাবে কত দিন চলবে?’’

সবার কথা শুনে নিজেকে অসহায় লাগছে। ঠিক যায়গা কোনটা? যেখানে আমি আমার পা রাখব? সত্যয় বড় অসহায়। বড় বেশি অন্ধকার তাড়া করে ফেরে। আমি একে বারে ভেঙে পড়েছি। পরীক্ষার রেজাল্ট বেরলে বাপের পয়সা ধ্বংস করে গ্র্যাজুয়েট হব না। কলকাতায় থাকব। পারলে নলপুরের বাড়িতে এসো। নয়লে চিঠি দিও। কি কারণে বুঝতে পারছি না, সব বোঝার জন্য মশাল জ্বেলে একটা চিঠি দিও।

ঝিলম  

পত্র উপত্যকা-৪   

সত্যেন সাংবাদিক হওয়ার জন্য বিগত শতাব্দীর আশির দশক থেকে লড়াই করছে। সাহিত্যিক সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় বিংশ শতাব্দীর শেশের দিকে একবার বলেছিলেন, যাক সত্যেন তুমি সাংবাদিক হয়েছ দেখে ভালো লাগছে। একুশ শতাব্দীর প্রথম দশকের শেষ  দিকে সাংবাদিক রাঘব বন্দ্যোপাধ্যায় সত্যেনকে নিয়ে মন্তব্য করেছিল। একটি জনপ্রিয় নিউজ চ্যনেলের অফিসের লনে দাঁড়িয়ে দামি সিগারেট খেতে খেতে বলেছিল, তুই শেষ পর্যন্ত লড়াইটা জিততে পারলি, সাংবাদিক হতে পারলি।সত্যেনের সাংবাদিক হওয়ার প্রয়াস কতটা আন্তরিক ছিল বর্তমান পত্রিকার সম্পাদক বরুণ সেনগুপ্তকে লেখা এই চিঠি আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে। সত্যেনের খসড়া চিঠির একটি।

২৭-৮-৮৪

শ্রদ্ধেয় বরুণবাবু,

জানি না ব্যক্তিগত আবেদন পত্রটি ঔদ্ধত্য হয়ে উঠল কিনা! বাঙলা ভাষার প্রশ্রয়ে আপনার কাছে তথা ‘বর্তমান’ পত্রিকার পরিচালকমণ্ডলীর কাছে আবেদন করছি।

সাংবাদিক হতে চান? এই শিরোনামে আপনার সম্পাদনায় ‘বর্তমান’ পত্রিকার বিঞ্জাপন দেখে বলতে ইচ্ছে করে। অবশ্যই।কিন্তু থমকে যাই। কারণ যোগ্যতা আমার সীমাবদ্ধ। সেই সঙ্গে বিঞ্জাপনের শর্ত পূরণ করার অধিকারের অভাব। তবুও সাংবাদিক হতে চাই। আমি মূলত বীরভূমের লাল মাটির পাথুরে ছেলে।……………। গত আট বছর ধরে সাহিত্য-সাংবাদিকতার প্রস্তুতি আমাকে আর্থ-সামাজিক দৃষ্টিকোন দিয়েছে। লিটিল ম্যাগাজিনের ভীড়ে আমিও ছিলাম স্বতঃস্ফূর্ত। বীরভূম জেলার সাপ্তাহিকে প্রতিবাদী ছিলাম আমি। নির্যাতীত হয়েছি রাজনৈতিক দলের কাছে। বর্তমানে অর্থনৈতিক মুক্তির আশায় কলকাতায় আছি।

গ্রাম-গঞ্জের পঞ্চায়েতের দুর্নীতি, রাজনৈতিক দলের গ্রাম্যতা, সাধারণ মানুষের মানসিক ভারসাম্য তুলে আনতে পারব। বৈশাখের রোদে ভিজে অথবা আষাঢ়ের জলা-পাঁক ভেঙে।

‘বর্তমান’ সুযোগ দিলে যে কোন বিষয়ের ওপর নিবন্ধ, ফিচার/প্রতিবেদন লেখার আধুনিকতার হার্ডল রেসে নামতে পারি। যে কোন অঞ্চলে ‘বর্তমান’ পত্রিকার একজন শরিক হয়ে খবর নিঙড়ে আনতে পারব। কিছুদিন শিক্ষানবীশ থাকতে পারলে কৌশলী ঞ্জান অর্জন করা সম্ভব। পত্রিকার দপ্তরে সাধারণ কর্মীর দায়িত্বে থেকেও সংবাদপত্রকে সাহায্য করতে পারি।‘তদ্বির’ শব্দটির বেড়া ভেঙে ‘আবেদন পত্রটি’ নিয়মমাফিক হয়ে উঠবে কি? 

নমস্কার সহ

সত্যেন রায়।

সম্পাদক বরুণবাবু একটি এনভলপ(খাম)-এ বর্তমান পত্রিকার প্যাডে চার লাইনের উত্তর দিয়েছিলেন। নিজে হাতে লিখেছিলেন, ‘একটি বিশেষ কারণে আপনাকে নিতে পারছি না। ভবিষ্যতে সুযোগ হলে জানাব।’ সত্যেন আমার থেকে বয়সে কিছুটা ছোট। সাংবাদিক মর্যাদার জন্য ও আজও লড়াই করছে। কিন্তু ও বিশ্বাস করে সাহিত্যিক বিমল করের উপলব্ধিতে। বিমল কর দেখেছিলেন, কীভাবে মধ্যবিত্ত জীবনের অভিমুখের বদল ঘটেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমাজজীবনে এসেছে বিভিন্ন পরিবর্তনের ঢেউ। তিনি উপলব্ধি করেছেন। সময়ের ছন্দে সমাজ পরিবর্তনের টানাপড়েন দেখেছেন।বদলে যাওয়া সময়কালকে তিনি অভিভাবকের দায়বদ্ধতায় সাক্ষী থেকেছেন। সেই দেখা তাঁকে বিশ্বাস করতে শিখিয়েছে, পাকদন্ডি জীবনের চক্করে আকন্ঠ অতলে ডুবছে মানুষ। তবুও বেঁচে থাকছে সামাজিক, পারিবারিক মূল্যবোধ। সত্যেন এই বিশ্বাস নিয়ে আজও সাংবাদিকতায় আছে।                                              

 

Comments

Popular posts from this blog

দু’জন বাঙালি বিঞ্জানীর গণিতিক পদার্থ বিঞ্জানে বিশ্ব বিখ্যাত আবিষ্কার

‘ইউনিভার্সাল রিলিজিয়ন’ ও ভারতীয় সাধারণতন্ত্র

লোকসভা অধিবেশন শুরুর পরেই কি ধর্মঘট প্রত্যাহার?