সেন্ট্রাল ভিস্তার নতুন সংসদ ভবনের সিংহাসন দখলের দৌড়






দীপেন্দু চৌধুরী

আমরা হাহাকার করে চিৎকার করলেও দেশ-দশের দায়িত্ব নিতে পারব না। আমাদের সেই যোগ্যতা নেই। গলাবাজি করে সুরেলা গানও গাইতে পারব না। আমাদের সেই যোগ্যতাও গড়ে ওঠেনি। নারদকাঠি হাতে তবলাও বাজাতে পারি না। এই না পারার জন্য হাহাকার করেও দেখেছি ‘রাজনীতির লক্ষ্মণ’ রেখা টপকাতে পারিনি। সেই কারণে এতগুলি ‘না’ পারার গল্প অ-ছান্দিকভাবে সাজিয়ে দিতে হচ্ছে। নিজের কথা নয় দশের কথা বলতে পারলে মানুষ হিসেবে গর্ব হয়। দেশের কথা বলার সময় রাজনীতির ময়দানে বাধ্য হয়ে নেমে পড়তে হয়। রাজনীতির কুশিলবদের প্রসঙ্গ অনাবিল প্রাসঙ্গিকতায় এসে যায়। আমাদের দেশ ভারতকে বর্তমান আলোচ্য করোনা অর্থনীতিতে কেমন যেন ক্লান্ত দেখাচ্ছে। করোনা সভ্যতা শুরু হওয়ার আগে থেকেই মোদীর নেতৃত্বে এনডিএ সরকারের ব্যর্থতা প্রকট হতে থাকে। ব্যাঙ্ক-বীমা ক্ষেত্রে বিলগ্নিকরণ। একগুছ শিল্পপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ব্যাঙ্কের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে গিয়ে বহাল তবিয়তে আছে। টাকা আত্মসাৎ করা এবং বিদেশে চম্পট দেওয়ার ঘটনা মোদী সরকারের আমলেই ঘটেছে।

কৃষক বিরোধী তিন কৃষি আইন, নতুন শ্রম আইন মোদী সরকারের নেতৃত্বে সংস্কারের কাজ না উন্নয়ন বিরধী প্রযোজনা? একের পর এক শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই নিয়ে বিরোধীরা সদলবলে সরকারের দুর্বলতাগুলি চিহ্নিত করে সরকারের সামনে পেশ করতে পেরেছে। তারপরেও কেন্দ্র পেট্রল-ডিজেলের দাম বাড়িয়েই চলেছে। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিয়ে রাজনীতির ঘোলা জলে আমাদের নামতে বাধ্য করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ এবং বিরোধীরা ন্যায্য দাবি করছে, সবার জন্য বিনামূল্যে ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা কেন্দ্রীয় সরকারকেই করতে হবে। একদিনে কত কোটি টিকা দেওয়া হয়েছে এই পরিসংখ্যান আমদের জীবন বাঁচাতে পারবে না। পরিসংখ্যান যে কোনও রাষ্ট্রের তাত্বিকদের অত্যন্ত কাজে আসে। রাজনীতিবিদরাও কূট বিতর্কের জন্য পরিসংখ্যানকে কাজে লাগায়। কিন্তু গরিব-গুর্বো অশিক্ষিত মানুষগুলি বাঁচতে চায়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মা-বাবা হারানো অনাথ শিশুরা বাঁচতে চায়। ওরা ভ্যাকসিন চায়।ওদের ভ্যাকসিন দিন।         

লকডাউনের কারণে বহু মানুষের কাজ নেই। কারও চাকরি চলে গেছে, কেউ কেউ ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। অটো রিক্সার মালিক, চালক কর্মহীন। যারা ট্যাক্সি চালাত তাঁদেরও কাজ নেই। ওলা-উবের চালকরাও কাজ হারিয়ে বিভ্রান্ত। বিশ্বের অন্যান্য দেশের করোনা সভ্যতার বহুমাত্রিক রাজনীতি-সংস্কৃতির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় কেমন যেন মুহ্যমান ভারতের শাসকরা। তারা ব্যস্ত ২০ হাজার কোটি টাকার বাজেটের ‘সেন্ট্রাল ভিস্তা’ নামক এক প্রকল্প নিয়ে। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে নতুন সংসদ ভবন গড়ে তুলতে হবে। কারণ ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের সমীকরণ অনেকটা বদলে যাবে। হিন্দি বলয় তথা ‘বিমারু’ রাজ্যের সাংসদ সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে। বিজেপি অত্যন্ত সুচতুরভাবে সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্প নিয়ে এগতে চাইছে। কারণ যোগীর নেতৃত্বে উত্তরপ্রদেশ রাজ্য বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। জাতপাত, সামাজিক হিংসা, সাম্প্রদায়িক টানাপড়েন এবং অযোধ্যার রামমন্দির ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ যথেষ্ট বেকায়দায়। রাজ্যে নতুন করে তৈরি হয়েছে দলীয় কোন্দল। যোগী বিরোধী গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সঙ্ঘপরিবার পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টায় ইতিমধ্যে নেমে পড়তে বাধ্য হয়েছে।  

করোনা সারা বিশ্বে যখন প্রধান ইস্যু, বিজেপির পাশাপাশি এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের নেতৃত্বেও শুরু হয়েছে ২০২৪ সালের লোকসভা দখলের সলতে পাকানোর প্রস্তুতি। সেন্ট্রাল ভিস্তার নতুন সংসদ ভবনের সিংহাসন দখলের দৌড়ে অনেকেই থাকতে চাইছে। কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে নতুন একটি বিরোধী গোষ্ঠী গড়ে তোলার প্রয়াস বেশ কিছুদিন যাবৎ শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই প্রকল্পের নাম দিয়েছেন ‘মমতা মিশন’। কারণ ‘রাষ্ট্র মঞ্চ’ নামে এই জোট গড়ে তোলার পিছনে আছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর। বছর তিনেক আগে প্রাক্তন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহা, অরুণ শৌরিদের তৈরি এই মঞ্চ।

বেশ কিছুদিন যাবৎ সামাজিক মাধ্যমে আমদের নজরে আসছে ‘বেঙ্গলি পিএম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’। এই প্রচারে কারও আপত্তি থাকার কথা নয়। তিন দশক আগে বাঙালি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জ্যোতি বসুর নাম আমরা শুনেছিলাম। জ্যোতি বসুর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যথেষ্ট সম্ভবনাও ছিল তৎকালীন আর্থরাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে। কিন্তু তার নিজের দলের সতীর্থদের আপত্তিতে সে-দফায় তিনি প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি। এবং পরেও আর হতে পারলেন না। বিদেশী ঘরানার সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত ভারতীয় কমিউনিস্ট ব্যারিস্টার জ্যোতি বসুর আর প্রধানমন্ত্রী হওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তিনি আক্ষেপ চেপে রাখতে পারেননি। বলেছিলেন, ঐতিহাসিক ভুল। এক নকশালপন্থী নেতা সেই সময় আমাদের বলেছিলেন, জ্যোতি বাবু প্রধানমন্ত্রী হলে সারা দেশে বামেরা লাভবান হত। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সেই মেয়াদ এক বছর বা দু’বছর যাই হোক তবু বামেদের লাভ ছিল। কারণ হিসেবে সেই নেতা উল্লেখ করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গে জ্যোতিবাবুকে জননেতা হিসেবে সবাই চেনে, কিন্তু সারা ভারতে কতজন খেটেখাওয়া মানুষ তখন বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে চিনত? তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ভারতের যে কোনও প্রান্তে গেলে বামফ্রন্ট প্রচারের সুযোগ অনেক বেশি পেত। আমরা যে সময়ের কথা বলছি তখন ‘সামাজিক মাধ্যম’ ছিল না। স্মার্ট ফোনের যুগও নয়, তাই জ্যোতিবাবুর পরিচিতি একটা সীমা পর্যন্ত ছিল

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের প্রধানমন্ত্রী হতে চাইলে বা হতে পারলে আমাদের আপত্তি করার কিছু নেই। কারণ বাঙালি হিসেবে একটা আবেগ আমাদের মধ্যেও কাজ করবে। তবে রাজনীতির মঞ্চে যা কিছু ভাবা হয় বাস্তবতার শক্ত মাটিতে দাঁড়িয়ে। কারণ রাজনীতি হচ্ছে সম্ভাবনার শিল্প। ‘কর্পোরেট স্ট্যাটেজিস্ট’ তথা সফল পেশাদার ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোর, ১৩৬ বছরের পুরনো জাতীয় কংগ্রেসকে প্রস্তাবিত গোষ্ঠীর বাইরে রেখে নতুন একটি মোর্চা গড়ে তুলতে চাইছেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ‘জাতীয়তাবাদী সংস্কৃতি’ দর্শনের হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপিকে আটকাতে এই মোর্চা বা জোট। এনসিপির মজিদ মেনন বলেছেন, ‘’এই মঞ্চ বিজেপি বিরোধিতার নয়। কোনও রাজনৈতিক বৈষম্যও নেই। কংগ্রেসের পাঁচ নেতাকেও আমত্রণ জানানো হয়েছিল।‘’ কংগ্রেস দল সূত্রে খবর, ওই পাঁচ নেতা আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন ব্যক্তিগত স্তরে। কংগ্রেসের নেতা হিসেবে তাদের আমন্ত্রণ জানান হয়নি। সিপিআইয়ের ডি রাজা আমন্ত্রণ পেয়েও বৈঠকে যাননি। মোদী-বিরোধী জোট ইস্যুকে সামনে রেখে গত ১৫ দিনের মধ্যে এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের সঙ্গে প্রশান্ত এ পর্যন্ত তিনবার বৈঠক করলেন। হয়ত পরে আবার করবেন। ২২ জুন দিল্লিতে পওয়ারের বাসভবনে ‘রাষ্ট্র মঞ্চ’ নামক প্রস্তাবিত গোষ্ঠীর ডাকা আটটি দলের একদফা বৈঠক হয়ে গিয়েছে। মোদী বিরোধী জোটের প্রধান মুখ হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে আনার একটা পরিকল্পনা আছে কিনা সেই নিয়ে জল্পনা দানা বাঁধতে শুরু করেছে।

এটা ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে ২০২১ সালের সপ্তদশ বিধানসভা নির্বাচনের পরে মমতাকে বিজেপি-বিরোধী মুখ হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস তুলে ধরতে পেরেছে। সেই সুবাদে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ হিসেবে নিজেকে দাবি করতেই পারেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, একই দাবি কেরলের এলডিএফের মুখ্যমন্ত্রী পিনরাই বিজয়নও করতে পারেন। কারণ তিনি বিজেপিকে বিধানসভায় খাতাই খুলতে দেননি। পাশাপাশি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রী মুখের দাবিদার হতেই পারেন।   

সেদিনের বৈঠকে যে আটটি দলের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কথায়, এদের অনেকে নিজের দলের হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা নেই। ২২ জুন বৈঠকে উপস্থিত এক নেতা বলেছেন, ‘’এই উদ্যোগ কোনও বৃহত্তর রাজনৈতিক লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়ার বা ভবিষ্যতে জোট গঠনের ক্ষমতা রাখে না।‘’ জোটের তরফে জানান হয়েছে, ‘নির্দিষ্ট বিচারধারা ও নীতি’ সামনে রেখে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলবে এই জোট।     

প্রশান্ত কিশোরের ডাকা এই বৈঠক ভেস্তে গেলেও একটি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য ঘটনার সঙ্গে আমরা পরিচিত হয়েছি। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি নিজে আমন্ত্রণ পেলেও বৈঠকে যাননি। ২২ জুন পওয়ারের বাড়ির বৈঠকে সিপিএমের নীলোৎপল বসু উপস্থিত ছিলেন। সম্ভবত আজকের বাস্তবতায় এটাই হওয়া বাঞ্ছনীয়। এমন সিদ্ধান্তকে প্রগতিধারার কূটনীতি বলতে হবে। সবাই জানে প্রশান্ত কিশোর বিজেপি-বিরোধী নতুন মঞ্চ গড়ে তোলার জন্য যে উদ্যোগ নিচ্ছেন, তার পিছনে তৃণমূল যোগ আছে। এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। বলা বাহুল্য, তৃণমূল নেত্রীর পরামর্শ ছাড়া প্রশান্ত কিশোর এক পা এগতে চাইবেন না বা পারবেন না। আমরা জানি তৃণমূল কংগ্রেস দলগতভাবে যেখানে থাকে বাংলা তথা ভারতীয় সিপিএম সেখানে থাকে না। সাম্প্রতিক অতীতের অভিঞ্জতা আমাদের এমনটা ভাবতে শিখিয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আমরা লক্ষ্য করলাম। বিজেপিকে আটকাতে সিপিএম যে কোনও মঞ্চে থাকতে চাইছে। তাই তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে ডাকা শরদ পওয়ারের বাড়িতে ২২ জুনের বৈঠকে সিপিএম নীলোৎপল বসুকে পাঠিয়ে মোদী-বিরোধী জোট-ঐক্যের সলতে পাকাতে সাহায্য করে এল বলা যায়। অত্যন্ত বস্তবোচিত সিদ্ধান্ত, কারণ রাজনীতি সম্ভবনার শিল্প। নীলোৎপলের কথায়, ‘’সমমনভাবাপন্নরা বসে আলোচনা করেছি। রাজনৈতিক দলের লোকেরা থাকলেও, তারা দলের প্রতিনিধিত্ব করছেন না। অর্থনীতি, গণতন্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, সাংবিধানিক কাঠামো ভেঙে পড়ছে। আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে।‘’

তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অতীতের একটি প্রতিক্রিয়া এই ব্যর্থ  জোট গঠনের প্রক্রিয়ার সময় সম্প্রতি সামনে এসেছে। সম্ভবত ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময় মমতা বলেছিলেন, যে রাজ্যে যে বিরোধী দল শক্তিশালী, লোকসভা ভোটে সেই রাজ্যে সেই দলকে সামনে রেখে, বাকিরা তাঁকে সহযোগিতা করুক। একই ভাবে যে সব রাজ্যে কংগ্রেস শক্তিশালী সেখানে কংগ্রেসকে বাইরে রেখে ফ্রন্ট গঠন করলে সাফল্য আসবে না। মমতার প্রস্তাবিত নীতি এই সত্যকে সমর্থন করছে, যেমন ২০২২ সালে যে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট আছে, সেই রাজ্যগুলির মধ্যে উত্তরপ্রদেশ বাদ দিলে বাকী চারটি রাজ্যে বিরোধীদের অস্তিত্ব প্রায় নেই বললেই চলে।   

আসন্ন লোকসভা ভোটে তৃণমূলনেত্রীর দেওয়া ফর্মুলাতেই জোট হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতক বিশ্লেষকরাও। কিন্তু তারা প্রশ্ন তুলছেন মোদী বিরোধী জোট ইউপিএ-তো আছে। নতুন করে আবার কেন জোট? এই জোট অবিজেপি- অকংগ্রেসি জোট নয়ত? না তৃতীয় ফ্রন্ট? নতুন জোট গড়ে উঠলে এনডিএ-বিরোধী ভোট ভাগ হয়ে বিজেপির আরও সুবিধা করে দেবেনা-তো? ২০০৪ সালে ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধির নেতৃত্ব বাজপেয়ী-আদবানীর বিজেপিকে হারাতে সক্ষম হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন ডঃ মনমোহন সিংহ। সনিয়া গাঁধির বয়স হয়েছে। তিনি অসুস্থ। তবুও কংগ্রেস সহ ইউপিএ জোটকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বর্তমান সময়ে দেশের স্বার্থের কথা ভেবে রাহুল গাঁধিকে এগিয়ে আস্তে হবে। কারণ গত কয়েক বছরে কংগ্রেস দলে রাহুল গাঁধির গ্রহণযোগ্যতা অনেকটা বেড়েছে। রাহুল গাঁধি নিজে প্রধানমন্ত্রী না হতে চাইলে তাঁকেই অন্য কারও নাম প্রস্তাব করতে হবে। সেই নাম শতাব্দীপ্রাচীন কংগ্রেস দলের হোক, অথবা ইউপিএ জোটের শরিক দলের কোনও বিশ্বাসযোগ্যা ধর্মনিরপেক্ষ নেতার নাম তাঁকে বলতে হবে। এ ছাড়া বিরোধীদের সামনে এনডিএ বিরোধী কোনও বিকল্প চোখের সামনে দেখা যাচ্ছে না। ইউপিএ জোট করোনা সভ্যতার বাস্তবতায় আর্থসামাজিক দায়িত্বের কথা ভাবলে তবেই ভারতে বিজেপির বিকল্প জোট লড়াইয়ের ময়দানে থাকতে পারে।                              

 

Comments

Popular posts from this blog

দু’জন বাঙালি বিঞ্জানীর গণিতিক পদার্থ বিঞ্জানে বিশ্ব বিখ্যাত আবিষ্কার

‘ইউনিভার্সাল রিলিজিয়ন’ ও ভারতীয় সাধারণতন্ত্র

লোকসভা অধিবেশন শুরুর পরেই কি ধর্মঘট প্রত্যাহার?