‘আমি নয়- আমরা’ এক যুগ আগের স্লোগান আজও প্রাসঙ্গিক




দীপেন্দু চৌধুরী 

১৯৯০ সালে অমলেশ ত্রিপাঠী তার ‘স্বাধীনতা আন্দোলন এবং কংগ্রেসের ইতিহাস’ বইয়ের ভূমিকায় লিখেছেন, ‘’আজকের কংগ্রেসের কাছে অতীতের সাফল্য উজ্জবলতার কোনও গুরুত্ব নেই। কারণ দীর্ঘায়িত জীবনের সত্য কি? এটাই একটা জাতি রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে সহায়ক হয় মুক্ত বিশ্বের মুখোমুখি হতে।‘’

৩০ বছর আগে লেখা। তারই প্রতিধ্বনি আবার শুনতে পেলাম সম্প্রতি। প্রশ্নটার জন্য প্রস্তুত হয়েই এসেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধি। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে চিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক দীপেশ চক্রবর্তীর সঙ্গে অনলাইনে একটি মতবিনিময় আলোচনাসভা ছিল রাহুলের। সঙ্গে চিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও ছিলেন। ভারতের বর্তমান রাজনীতি নিয়ে রাহুল গাঁধির কাছ থেকে শোনার জন্য। প্রাথমিক প্রশ্নটা ছিল ‘আপনি কেন রাজনীতিতে এলেন’? এই প্রশ্নের উত্তরে রাহুল গাঁধি নিজের পছন্দের বিষয় হিসেবে কংগ্রেসের রাজনীতির কথা বলেন। উল্লেখ করেন গত কয়েক বছরে দেশের রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতির প্রসঙ্গ। রাহুল জানান তিনি মাত্র ১৫ বছর রাজনীতিতে এসেছেন। তার আগে তিনি রাজনীতির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। এরপরেই ইতিহাসবিদ দীপেশ চক্রবর্তী বিতর্কিত এবং বহুবার আলোচিত প্রসঙ্গ তোলেন। যদিও তিনি রাহুলের অনুমতি নেওয়ার জন্য বলেন, ‘রাহুল আমি এবার ‘ক্রিটিক্যাল’ প্রশ্নে যাব’কংগ্রেস দলের প্রাক্তন সভাপতি তৈরি হয়েই ছিলেন। তিনি জানতেন এই প্রশ্নটা এক সময় ধেয়ে আসবে। তাই শারীরিক ভাষায় বুঝিয়ে দিলেন তিনি যে কোনও প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত আছেন। এবং উত্তরে বললেন, আপনি আমার গুরু।

দীপেশ চক্রবর্তীর প্রশ্ন ছিল পরিবারতন্ত্র নিয়ে। তিনি জানতে চাইলেন, নেহরু-গাঁধি পরিবারের কংগ্রেস দলকে নেতৃত্ব দেওয়া এবং দীর্ঘ সময় ধরে শাসন ক্ষমতায় থাকার বিষয়ে। রাহুল সোজা ব্যাটে খেললেন। তিনি বললেন, পরিবারতন্ত্র বিষয়টা বললে আমি বলব গত ৩০-৩১ বছর আমাদের পরিবারের কেউ কেন্দ্রীয় সরকারে নেই। ইউপিএ সরকারেও গাঁধি পরিবারের কোনও সদস্য ছিল না। আমি বিশ্বাস করি ধর্মনিরপেক্ষতায়। সমাজ উন্নয়নে, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের বিকাশ না ঘটাতে পারলে কর্মসংস্থান হবে না। আমি বিশ্বাস করি মানব কল্যাণে। স্বাধীনতার আগে থেকে  কংগ্রেসের সনদে, কর্মসূচীতে যে কথা বলা হচ্ছে। কে আমার বাবা ছিলেন, কে আমার ঠাকুমা ছিলেন অথবা কে আমার প্রপিতামহ ছিলেন সেই সম্পর্ককে গুরুত্ব দিতে আমি আগ্রহী নই। শতাব্দীপ্রাচীন কংগ্রেস দল পরিবর্তিত পরিস্থিতি এবং সময়ের দাবি মেনে সময়োপযোগী হিসেবে গড়ে নিচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি ‘ম্যায় নেহি হম’ দর্শনে।     

‘আমি নয় আমরা’ এই স্লোগান কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধির কাছে ভারতবাসী পেয়েছিল আজ থেকে দশ বছর আগে। দলে তথা সামাজিক পরিমণ্ডলে অতিরিক্ত ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা ভাঙতে তাঁর এই স্লোগান সম্ভবত। যে স্লোগানের প্রাসঙ্গিকতা আজও সমানভাবে রয়েছে। রাহুলের আত্মীক উপলব্ধির প্রতিধ্বনি আমরা কয়েক বছর আগেই থেকেই শুনতে পেয়েছিলাম। বিশ্বের সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কয়েক বছর আগে রাহুল গাঁধি বলেছিলেন, আমার বাবাও সন্ত্রাসের শিকার। একই কথা প্রিয়াঙ্কা গাঁধি বঢরাও বলেছিলেন। এদিনের আলোচনায় রাহুল আবার বললেন, আমি গর্বিত আমার ঠাকুমা এবং আমার বাবা দেশের জন্য আত্মবলিদান দিয়েছেন। ২০১৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর আমেরিকার প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তব্য রাখার সময় ‘মেরুকরণের রাজনীতি’ ‘ক্ষমতা হাতের মুঠোয় রাখা’ প্রসঙ্গে যেমন মোদীর সমালোচনা করেছেন পাশাপাশি স্বীকার করেছেন, রোজগার দিতে পারেনি কংগ্রেস। সেই ক্ষোভের কারণেই প্রধানমন্ত্রী হতে পেরেছেন প্রধানমন্ত্রী।    

রাহুল গাঁধিকে নিয়ে আলোচনায় একটি কথা নিজের সঙ্গে সন্তর্পণে আলাপ করে নিতে হচ্ছে। একজন বশংবদ এবং রাহুলের অনুগামী হিসেবে প্রতিবেদকের ডেস্ক থেকে লিখব? না ইতিহাসবিদ দীপেশ চক্রবর্তীর ভাষায় ‘ক্রিটিক্যাল’ বা সমালোচনার দৃষ্টি দিয়ে লেখা উচিত? নিজের কাছে নিজেই প্রশ্ন করছি। আমার মনে হয় উদার অর্থনীতি এবং উদার গণতন্ত্রের সমর্থক রাহুল গাঁধি তথা কংগ্রেস পরিবার আমাকে অনুমতি দেবেন গঠনমূলক আলোচনার। একজন নিরপেক্ষ প্রতিবেদক হিসেবে। কারণ অতীতের কংগ্রেসের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে কংগ্রেস দেশের শতাব্দী প্রাচীন দল হিসেবে নিজেদের সমালোচনা করেছে এবং করছে। যেমন জরুরীঅবস্থা প্রসঙ্গে কংগ্রেস থেকে ভুল স্বীকার করা হয়েছে। অথবা ২০০৩ সালে শিমলার চিন্তন শিবিরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, বিজেপিকে হারাতে বৃহত্তর ধর্মনিরপেক্ষ জোট গড়ে তোলা। এই সিদ্ধান্ত ছিল কংগ্রেস নামক দলের কাছে ঐতিহাসিক। কারণ এর পাঁচ বছর আগে ১৯৯৮ সালে পঁচমড়ী চিন্তন শিবির উল্লেখযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। কংগ্রেস নামক দলের গরিমা এবং সাফল্যকে মাথায় রেখে পঁচমড়ী চিন্তন শিবিরের  সিদ্ধান্ত ছিল কংগ্রেস দল হিসেবে ‘একলা চলো’ অবস্থানে অনড় থাকবে দল।        

এই প্রসঙ্গে বলা যায় ‘ইন্দিরা ইজ ইন্ডিয়া’ যুগের ‘কমিটেড জুডিশিয়ারি’ থেকে কংগ্রেসের নেতৃত্বে উন্নত গণতন্ত্রে ভারত যদি উত্তীর্ণ হতে পারে তবে বর্তমান সময়ের হিংসা, ঘৃণার নামে যে রাজনীতি ভারতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে সেই তথাকথিত ‘হিন্দুত্ববাদী’ রাজনীতির কাঁটাতারের সীমান্ত ভেঙে নতুন ভারত আমরা অবশ্যই দেখব। আমরা আশাবাদী। যদিও এই স্বল্প পরিসরে রাহুল গাঁধির ১৫ বছরের রাজনৈতিক জীবনের সামগ্রিক ছবি তুলে ধরা সম্ভব নয়।

আমাদের আলোচনার বুনিয়াদটা তৈরি করে দিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধি। রাজস্থানের জয়পুরে অনুষ্ঠিত  ২০১৩ সালে জানুয়ারি মাসে কংগ্রেসের চিন্তন শিবিরের উদ্বোধনী বক্তৃতায় কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধি বলেন, ‘’ নতুন পরিস্থিতিতে ভারতকে চিনতে হবে। যে ভারতে নবীন প্রজন্মের সংখ্যা বাড়ছে। তুলনায় যারা আগের থেকে অনেক বেশি শিক্ষিত। সামাজিক পরিবর্তনের জন্য তাঁদের আকাঙ্খা, অসহিষ্ণুতা এবং চাহিদাও তাই বেশি।‘’ গঙ্গা-  যমুনা, পদ্মা-শতদ্রু দিয়ে অনেক জল গত আট বছরে বয়ে গেছে। কিন্তু আজ স্বীকার করতেই হবে, ভারত তথা কংগ্রেস দলের অন্যতম চিন্তাবিদ এবং রাজনীতিবিদ সনিয়া গাঁধি সুর বেঁধে দিয়েছিলেন কংগ্রেসের তৃতীয় চিন্তন শিবিরে। তার বেঁধে দেওয়া ‘গাইড লাইন’ বা ‘রোডম্যাপ’ অনুসরণ করছে কংগ্রেস নামক শতাব্দীপ্রাচীন দলটি। আজকের ভারতও সেই অর্থে তরুণ নেতৃত্বের হাতে। যে অভিযান শুরু হয়েছিল ২০১৩ সালের জয়পুর চিন্তন শিবির থেকে। এই শিবির থেকেই রাহুল গাঁধিকে সামনে আনতে শুরু করে কংগ্রেস। সঙ্গে একঝাঁক তরুণ নেতৃত্ব।  জয়পুর চিন্তন শিবিরের মঞ্চে কংগ্রেসের বর্ষীয়ানদের সঙ্গেই বসেছিলেন তরুণ প্রজন্মের নেতারা। জয়পুরের তৃতীয় চিন্তন শিবিরের বৈঠকে  উপস্থিত সাড়ে তিনশো নেতার মধ্যে নবীন নেতৃত্বের সংখ্যা ছিল ১৩০ জনেরও বেশি। ইতিহাসবিদ দীপেশ চক্রবর্তীকে দেওয়া উত্তরে রাহুল সেই কথাই বলতে চেয়েছেন।

নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে ২০১৪ সালে বিজেপি সরকার গঠনের পর রাহুল গাঁধি প্রথম জোরের সঙ্গে নিজের মত প্রকাশ করেন। ২০১৫ সালে ৬ নভেম্বর দিল্লিতে একটি আলোচনা সভায় রাহুল বলেন, ‘’Secularism is in the blood of the Conggress. Respect for everybody in the country is in our DNA- we have to just reinvigorate the organisation.’’ এই সভায় উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস দলের ডঃ মনমোহন সিংহ সহ কয়েকজন শীর্ষনেতা এবং সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের চিন্তবিদ, বুদ্ধিজীবীরা। ২০১৬ সাল থেকে এক টানা ২০২০ পর্যন্ত রাহুল গাঁধি সামনে থেকে বিজেপি নামক একটি হিন্দুত্ববাদী দল এবং তাঁদের নেতৃত্বে চলা সরকারের বিরুদ্ধে  আক্রমণ শানাচ্ছেন। যেমন বিমুদ্রাকরণ, কোভিড-১৯, করোনা সময়কালে পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা। লাদাখ সীমান্তে চিনের আগ্রাসন এবং কৃষকদের সমস্যা। বিরোধী দলের সাংসদ হিসেবে রাহুল গাঁধিই প্রথম ট্র্যাক্টর মিছিল করে কৃষকদের পাশে দাড়িয়েছিলেন। বিগত বছরের অক্টোবর মাসে রাহুল পঞ্জাব এবং হরিয়ানায় ট্র্যাক্টর মিছিল করেন। যে রাহুল গাঁধি কে বিজেপি এক সময় ‘পাপ্পু’ সম্বোধন করে আক্রমণ শানিয়েছে ভারতের সেই উদীয়মান নেতাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ বিজেপি নামক একটি সুসংহত দলের শীর্ষ নেতৃত্ব গুরতব দিতে বাধ্য হচ্ছেনতাঁর বুদ্ধিদীপ্ত ধারালো সময়োপযোগী রাজনৈতিক বক্তব্যের জন্য। যে বক্তব্যে বিজেপিকে আক্রমণ করে শ্লেষ মিশিয়ে দিচ্ছেন তিনি। 

তিন কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে কৃষকরা আন্দোলন করছেন আড়াই মাসের বেশি। প্রায় ২০০ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বাজেট অধিবেশনে সাংসদ রাহুল গাঁধি রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর বিতর্কে অংশ নিয়ে মৃত কৃষকের স্মৃতিতে দু’মিনিট নীরবতা পালনের জন্য আহ্বান জানান। সব দলের সাংসদকে দাঁড়াতে বলে নিজেও দাঁড়ালেন। এই ঘটনায় আবার একবার বিজেপি দলের সাংসদরা হকচকিয়ে গেলেন। রাহুল নিজের বক্তব্যে সেদিন বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যে তিনটি কালা কানুন তৈরি করেছে কৃষি ক্ষেত্রের জন্য তাতে শুধুমাত্র কৃষিক্ষেত্র নয় বা কৃষক একা নয়, দেশের সমস্ত মানুষের খাবারের দাম বেড়ে যাবে। সবজি থেকে শুরু করে সমস্ত খুচরো ব্যবসার পণ্যে একচ্ছত্র পুঁজির দখলদারি সুনিশ্চিত হবে। বৃহৎ আন্তর্জাতিক পুঁজির অধীনে চলে যাবে গোটা ভারতের ৪০ লক্ষ মানুষের রুজি রোগারএই আইনে একটা ভয়ঙ্কর ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা চলছে। শুধুমাত্র নিজেদের দু’জন পেটোয়া শিল্পপতির স্বার্থে। এটা করছে, বিজেপির শীর্ষ দু’ই নেতা মোদী এবং অমিত শাহ। এই ব্যবস্থাকে রাহুল বর্তমান সরকারের ‘হাম দো হামারো দো’ নীতি বলে দাবি করেন। উল্লেখ করেন এই চারজন পুরো দেশটাকে বাজার ব্যবস্থায় পরিণত করে দেশের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। 

আমেরিকার কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এবং বিশ্বব্যাঙ্কের প্রাক্তন মুখ্য অর্থনীতিবিদ কোশিক বসু ১৩ ফেব্রুয়ারি একটি ছবি পোস্ট করে টুইট করেন, ‘দশ বছর আগে দিল্লিতে রাহুল গাঁধি আমাদের পরিবারের সহকারী এবং তার ছেলের সঙ্গে (ছবিটি দেওয়া হয়েছে)আপনি আমার বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ না করতে পারেন, কিন্তু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একথা জোর দিয়ে বলা যায়, রাহুল গাঁধি একজন ব্যতিক্রমী রাজনীতিবিদ।’ আরও একটি ছবি এই লেখায় দেওয়া হয়েছে, প্রয়াত কংগ্রেস নেতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ক্যাপ্টেন সতীশ শর্মার নশ্বর দেহ নিজের কাঁধে বহন করছেন রাহুল। রাহুল গাঁধি যে সামগ্রিকতায় বিশ্বাস  করেন সেটা আবারও প্রমাণ হল। পরিবেশকর্মী দিশা রবির গ্রেফতারের প্রতিবাদে ফেসবুকে রাহুল লিখেছেন, ‘বোল কি লব আজাদ হ্যায় তেরে/ বোল কি সচ জিন্দা হ্যায় অব তক! উয়ো ডরে হ্যায়, দেশ নেহি।’                                                                 

 

Comments

Popular posts from this blog

দু’জন বাঙালি বিঞ্জানীর গণিতিক পদার্থ বিঞ্জানে বিশ্ব বিখ্যাত আবিষ্কার

‘ইউনিভার্সাল রিলিজিয়ন’ ও ভারতীয় সাধারণতন্ত্র

লোকসভা অধিবেশন শুরুর পরেই কি ধর্মঘট প্রত্যাহার?