তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর গণতন্ত্র বনাম ভারতীয় সংসদীয় গণতন্ত্র



দীপেন্দু চৌধুরী 
একটা করে বছর যাচ্ছে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী ভারত’ নামক দেশটি আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে। আমরা যে দেশে থাকি সেই দেশের ‘আর্থ-সামাজিক’ বিকাশ এবং শ্রীবৃদ্ধি হলে কেউ কি আপত্তি করবে? দারিদ্রসীমার (বিপিএল) নীচের মানুষেরা যদি উপরের সারিতে উঠে আসে তা হলে কে আপত্তি করবে? আর কেনই বা করবে? আহাম্মকেরা আপত্তি করে থাকে। দেশ আর্থিকভাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে তুলানামূলক আলোচনায় তৃতীয় আর্থিক    শক্তি হিসাবে সম্ভ্রান্ত শ্রেণীতে উঠে আসার দাবি করছে। হয়ত সমালোচকরা এবং সাংবাদিকরা বিভিন্ন প্রামাণ্য এবং নির্ভরশীল তথ্য উল্লেখ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চাকরি প্রভৃতি ক্ষেত্রে ভারত কতটা আধুনিক হয়েছে সেই প্রশ্ন তুলছেন। আদৌ কি আধুনিক এবং সমৃদ্ধশালী দেশ ভারত? আমার যেমন এই বছর ২৬ জানুয়ারিতে একটা কথা মাথায় এসেছিলআমাদের দেশে আগে ১৫ অগস্ট ভারতের স্বাধীনতার দিন এবং ২৬ জানুয়ারি গণতন্ত্র দিবসে বিতর্কে ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ (Republic Day) – এর দিন ভারতে রাজনৈতিকবন্দি, প্রবীণ বন্দিদের কয়েকজন প্রশাসনের মানবিক সিদ্ধান্তে মুক্তি পেত। কিন্তু গত বছর ১৫ অগস্ট এবং এই বছর ২৬ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে কতজন মুক্তি পেয়েছেন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্য কারাদপ্তরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানালেন, ‘কিছুদিন আগে গৌরাঙ্গ চক্রবর্তী এবং প্রফুল্ল চক্রবর্তীকে মানবিক কারণে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যেমন ইউপিএ সরকার বিনায়ক সেনকে মুক্তি দিয়েছিল। আবার সম্প্রতি উল্লেখ করারমতো বিষয় ভাঙড় আন্দোলনের নেতা অলীক চক্রবর্তী, তার স্ত্রী শর্মিষ্ঠা সহ কয়েকজনকে আদালত জামিন দিয়েছে।’
তবু প্রশ্ন থেকে যায় এই বছর ভারতে কতজন রাজনৈতিকবন্দি মুক্তি পেয়েছেন? ৩০-৪০ বা ৫০ বছর জেলে আছেন এমন কতজন বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে রাজ্য সরকার অথবা কেন্দ্রীয় সরকার?
সম্প্রতি এই বিষয়কে কেন্দ্র করে কলকাতার ভারতসভা হলে একটি গণকনভেনশ হয়ে গেল রাজনৈতিক বন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ইউএপিএ সহ সমস্ত দমনমূলক আইন বাতিলের দাবিতে এই গণকনভেনশন ছিল ৪ ফেব্রুয়ারি১৯৪৯ সালের ২৭ এপ্রিল সকালে এই ভারতসভা হলেই রাজনৈতিক বন্দিমুক্তির দাবিতে একটি সভা হয়েছিল। অবিভক্ত ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির নারী সংগঠন ‘মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি’-র উদ্যোগে এই সভা হয়। সভা শেষে বেরিয়েছিল মিছিল, স্লোগান উঠেছিল জেলের মধ্যে কমিউনিস্ট পার্টির রাজনৈতিক কর্মীদের পিটিয়ে মারার বিরুদ্ধে। দাবি করা হয়েছিল রাজবন্দিদের মুক্তির। সেদিনের সেই ঐতিহাসিক মিছিলেও গুলি চালায় পুলিশ। বৌবাজারের মোড়ের কাছে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় লতিকা, প্রতিভা, অমিয়া, গীতা নামে কমিউনিস্ট পার্টির চারজন মহিলা সদস্যের। এবং বিমান নামে একজনের।      

এদিনের গণকনভেনশনের আয়োজক ছিল নকশালপন্থী বিভিন্ন গোষ্ঠীর ছাত্র সংগঠন এবং ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন এমন স্তরের গণতান্ত্রিক মানুষজন ‘প্রতিবাদের অধিকার মঞ্চ’-র পক্ষে আহবায়ক ছিলেন তিমির বসু, কল্যাণী মীনা এবং তরুণ বসু।  আয়োজকরা যে বিষয়টা দাবি করেছেন সেটা হল, আজ থেকে একশো বছর আগে ১৯১৯ সালে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় ব্রিটিশ সরকার একটি দমনমূলক আইন এনেছিল। আইনটির নাম ছিল ‘রাওলাট অ্যাক্ট’আয়োজকদের লিফলেট থেকে জানা যাচ্ছে এই কুখ্যাত আইনের বিরোধিতা করে কবি সুকুমার রায় একটি ‘ননসেন্স’ কবিতা রচনা করেন।
‘’শিবঠাকুরের আপন দেশে,
আইন কানুন সর্বনেশে!
কেউ যদি পা পিছলে প’ড়ে,
প্যায়দা এসে পাকড়ে ধরে,
কাজির কাছে হয় বিচার-
একুশ টাকা দন্ড তার ।‘’
        সুকুমার রায় 
ছাত্র সংগঠন ইউএসডিএফ, পিডিএসএফ, আইসা, রিফ্লেকশন। এই চারটি সংগঠনের ছাত্র নেতৃত্ব যে বিষয়গুলি আলোচনা করেছেন সেগুলি হচ্ছে ২০১৯ সালে একুশ শতাব্দীর তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর গতিশীল তথা প্রগতিশীল ‘স্বাধীন’ ভারতের সিডিশনের পরিস্থিতি নিয়ে। বক্তাদের বক্তব্য ইতিহাসের দিকে ফিরে দেখলে সেই এলিজাবেথান যুগে, অর্থাৎ ১৫৯০ সালে ‘সিডিশন’ (Sedition) অথবা ‘প্রজা-বিদ্রোহ’ কথাটা প্রথম ব্যবহার হয়। ব্রিটিশ সরকার ঔপনিবেশিক ভারতে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শায়েস্তা করতে অমানুষিক অত্যাচারের সঙ্গে সঙ্গে ১৮৭০ সালে সিডিশন আইন ভারতে আমদানি করে। ছাত্রনেতাদের আরও দাবি এই আইনবলে ব্রিটিশ শাসক ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ‘চরমপন্থী’ (লাল বাল পাল) গোষ্ঠীর সদস্য থেকে শুরু করে অহিংস আন্দোলনের নেতৃত্বকেও জেলে পুরতে পেরেছিল। দমনমূলক এই আইনের ক্ষমতা বলে ভগৎ সিং থেকে শুরু করে মোহনদাস করমচাঁদ গাঁধি, পণ্ডিত নেহরু, সহ আরও অনেককে কারাবাস করতে হয়েছে।
১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হল ঠিকই কিন্তু সিডিশন রয়েই গেল, পাশাপাশি আধুনিক ভারতের সরকার আরও কয়েকটি আইন প্রণয়ন করল। যেমন মিসা, পোটা, ইউএপিএ প্রভৃতি আইন হয়েছে আমাদের দেশে।  সংসদীয় গণতন্ত্র তথা সামাজিক গণতন্ত্রে বিশ্বাস করা ছাত্রনেতাদের বক্তব্যে এই আইনগুলির প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। তাঁরা বলছে কাশ্মীর-মণিপুরের ‘আফস্পা’ (AFSPA) আইনের বিরুদ্ধে লড়াই হোক অথবা ছত্তিশগড়ে আদিবাসীদের জল-জঙ্গল-জমি বাঁচানোর লড়াই। সব ক্ষেত্রেই এইসব আইনের প্রয়োগ হচ্ছে। ছাত্র নেতৃত্বের আরও দাবি   পরিবেশ আন্দোলনের ক্ষেত্রেও নেমে এসেছে রাষ্ট্রদ্রোহিতার খাঁড়া। যেমন উল্লেখ করা যায় তামিলনাড়ুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতায় যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল সেই আন্দোলনের কর্মীদের উপর নেমে এসেছে দমনপীড়নমূলক আইন। গুলিতে মৃত্যু হয়েছে কয়েক জনের। ছাত্রনেতাদের বক্তব্যে আরও উঠে এসেছে ২০১৮ সালের মহারাষ্ট্রের ভীমা-কোরেগাঁওতে দলিতদের উপর আক্রমণের বিষয়। এবং সেদিনের ঘটনায় আইনজীবী সুধা ভরদ্বাজ, লেখক এবং মানবাধিকার কর্মী ভারাভারা রাও, সাংবাদিক এবং মানবাধিকার কর্মী গৌতম নভলখা, শিক্ষাবিদ, লেখক মানবাধিকারকর্মী ভারনন গনজাল ভেজ। মানবাধিকার বিষয়ের আইনজীবী অরুণ ফেরেইরা, আদিবাসী জনজাতি মানুষদের অধিকার নিয়ে কাজ করেন ফাদার স্ট্যান স্বামী, অধ্যাপক এবং প্রাবন্ধিক আনন্দ টেলটুমডে (বর্তমানে মুক্ত), আইনজীবী সুরেন্দ্র গ্যাডগিল, দলিত অধিকার কর্মী সুধীর ধাবালে, জেলবন্দিদের অধিকাররক্ষাকর্মী রোয়ানা উইলসন, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যপিকা সোমা সেনদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ-ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। এটা গত কয়েক বছরের কুখ্যাত আইনের গ্রেপ্তারির সালতামামির হিসেব দিয়েছেন চারটি বিল্পবী এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব।
যাঁদের এ পর্যন্ত নাম আমরা উল্লেখ করলাম তাঁদের গায়ে ‘মাওবাদী’ নামক একটি শব্দের ছাপ রয়েছে বলে ভারত সরকারের প্রশাসকদের দাবি। তাঁরা নাকি প্রত্যেকেই ‘মাওবাদী’ কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত। ভারতের স্বাধীনতার ৭২ বছর পরেও ভারতীয় সংসদীয় ব্যবস্থা নিয়ে ভারতীয় বামপন্থীদের মধ্যে আজও বিতর্ক চলছে। আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ গণতন্ত্রের বৃহত্তম উৎসব ‘লোকসভা নির্বাচন’-কে এবং বিধানসভার নির্বাচনকেও তাঁদের নিজেদের স্বাধীন মত প্রকাশের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করছে। এবং বিশ্বাসও করছে। আমি নিজেও করি। এই নির্বাচন ব্যবস্থায় সংসদীয় গণতন্ত্রে স্থানীয়স্তরে যেসব ভোটের ব্যবস্থা হয় সেগুলিতে সাধারণ মানুষের উৎসাহ উল্লেখ করারমতো নজরে পড়ে। এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক দীপেশ চক্রবর্তীর একটি উধৃতির উল্লেখ করা যায়। অধ্যাপক চক্রবর্তী বলছেন, ‘’ঐতিহাসিক, সমাজতাত্বিক বা রাজনৈতিক বর্ণনায় সত্যের একটি বিশেষ ধারণা নিয়ে আমরা কাজ করি। যেমন ধরুণ এই রকম একটি উক্তি- ‘ভারতবর্ষে গণতন্ত্র এসেছে’ বা ‘ভারতবর্ষে ধনতন্ত্র কায়েম হয়েছে’- সমাজ বিঞ্জানীরা আকছার করে থাকেন। এখন ধনতন্ত্র (কি গণতন্ত্র) এসেছে কি আসেনি, তা নিয়ে সমাজ-বিশ্লেষকরা তর্ক করতেই পারেন। যা এসেছে তা যথার্থ গণতন্ত্র বা ধনতন্ত্র কি না, তা নিয়ে তর্কও অপ্রত্যাশিত হবে না। কিন্তু যা নিয়ে সচরাচর সমাজবিঞ্জানীরা তর্ক করবেনই না, তা হল এই গণতন্ত্র বা ধনতন্ত্রের ‘আসা’র ধারণাটি নিয়ে। তাত্বিকভাবে আমরা ধরেই নিই যে একটি সমাজ সামন্ততান্ত্রিক বা ধনতান্ত্রিক হতেই পারে। এই হতে-পারার সম্ভাবনার উপরেই তো রাজনৈতিক দর্শনের-এমনকী মার্ক্সবাদেরও- প্রতিষ্ঠা।‘’
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশাসনের সঙ্গে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মীদের লড়াই শুধুমাত্র কেন্দ্রীয় স্তরেই সীমাবদ্ধ নয়। ছাত্র সংগঠন সূত্রে পাওয়া খবর। আমাদের রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের আমলের একটি ঘটনা উল্লেখ করা যায়। ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। স্বপন দাশগুপ্ত ‘বাংলা পিপলস মার্চ’ নামে একটা পত্রিকা প্রকাশ করতেন। নকশাল পন্থী একটি গোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন সম্ভবত। অথবা ছিলেন না। কিন্তু যে কোনও গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবির আন্দোলনে তিনি থাকতেন। মিছিলে হাঁটতেন। লালগড় মঞ্চের মিছিলে হেঁটেছেনরাজনৈতিক বন্দিমুক্তির আন্দোলনের দাবিতে হেঁটেছেন। তারপর তিনি একদিন গ্রেপ্তার হলেন। এবং নেই মানুষ হয়ে গেলেন।  বন্দি অবস্থাতেই ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মারা যান, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম কর্মী স্বপন দাশগুপ্ত। আশির দশকের আরও একটি ঘটনার কথা এদিন শুনলাম। ভগত সিংহের ৫০ তম আত্মদান বর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রীয় জনবাদী সাংস্কৃতিক মোর্চার নাট্যদল ‘নিশান্ত’ উত্তর প্রদেশের গাজীপুরে ভগত সিংহের জীবন ও চিন্তাধারার আলোকে রচিত ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ মঞ্চস্থ করেছিল। সেই নাটকও পুলিশের কাছে সেদিন আপত্তিজনক মনে হয়েছিল। সেদিন গাজীপুরের পুলিশ প্রশাসন একরকম জোর করেই নাটক মঞ্চস্থ করা বন্ধ করে দেয়। এবং নাট্য কর্মীদের জেলা ত্যাগ করতে বাধ্য করে। এ রকম অসংখ্য উদাহারণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে উঠে আসছে। চারটি ছাত্র সংগঠনের তরফে অভিযোগ করা হয় আমাদের রাজ্যে ২০১৮ সালের ১২ নভেম্বর গোয়ালতোড়ে আদিবাসীদের অপুষ্টি সংক্রান্ত সমীক্ষা চালাতে যাওয়ার অপরাধে দু’জন ছাত্র আন্দোলনের কর্মী টিপু সুলতান এবং অর্কদীপ গোস্বামী সহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়
এই চারজনের অপরাধ হিসেবে বলা হয়েছে মাওবাদী সাহিত্য সঙ্গে ছিল। সংগঠকদের দাবি, কেরল হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল শুধুমাত্র কোনও রাজনৈতিক আদর্শে বিশ্বাসী হওয়ার জন্য বা কোনও নির্দিষ্ট সংগঠনের সদস্য হওয়ার জন্য কাউকে গ্রেপ্তার করা যায় না। এদিনের ভারতসভা হলের গণকনভেনশনে বক্তব্য রাখার কথা ছিল লেখক এবং সমাজকর্মী সব্যসাচী দেবের। কিন্তু তিনি অসুস্থ থাকার জন্য আস্তে পারেননি। মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র বলেন, ‘’দেশদ্রোহী সন্দেহে খুন হয়ে যাওয়াটাও সহজ। গ্রেপ্তার করে হাজতে পুরে দেওয়াও সহজ। দেশদ্রোহী সন্দেহে সামাজিকভাবে বয়কট করাটাও সহজ। কিন্তু ভারতে এবং ভারতীয় উপমহাদেশে ন্যায় বিচার পাওয়াটা কঠিন। আন্তর্জাতিক আইনে আছে, মানবাধিকার আমাদের গণতান্ত্রিক তথা মৌলিক অধিকার। সেই অধিকারকে কেড়ে নেওয়া যায় না। তবু তথ্য জানার অধিকারও কেড়ে নিচ্ছে সরকার।‘’
ছাত্র সংগঠনের তরফে এদিন তিনদফা দাবি জানান হয়। ১) সমস্ত দমনমূলক আইন বাতিল করতে হবে। ২) গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কর্মীদের উপর মিথ্যা মামলা দেওয়া বন্ধ করতে হবে। ৩) সমস্ত রাজবন্দীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
লেখাটি মাস দুয়েক আগে লেখা। লেখাটি প্রকাশের আগে আজ ১২ এপ্রিল প্রভাতি সংবাদপত্রে দেখলাম মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম জামিন পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্ট এই জামিন মঞ্জুর করেছে। গণপ্রজাতন্ত্রী ভারত অনেক সীমাবদ্ধতা সত্বেও বৃহত্তর গণতন্ত্রের পথে কয়েক কদম এগিয়ে যেতে পারছে। এই জন্য বিচার বিভাগের ‘নিরপেক্ষতা’ অবশ্যই  সহায়ক ভূমিকা নিচ্ছে। সেই সঙ্গে বলতেই হবে গণ আন্দোলনের কর্মীদের কথা। এবং গণতান্ত্রিক সংবাদ মাধ্যমের প্রসঙ্গও বলতে হবে। পাশাপাশি রাজ্যের আইন বিভাগ এবং গণতন্ত্রপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করতে হয়। মেধাবী ছাত্র অর্ণব দাম জেলে থাকাকালীন উচ্চ শিক্ষার জন্য সব রকমের সহযোগিতা রাজ্য কারা দপ্তরের বিভাগীয় আধিকারিকদের কাছ থেকে পেয়েছেন। এই সাহায্য পাওয়ার জন্য তাঁকে জেলে ধর্না আন্দোলন করতে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব নির্ভীক, নিরপেক্ষ সংসদীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন এমনতর সাংবাদিক এবং সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের আরও পরিসর দিন। তাহলে তাঁরা দেশ ও দশের দায়িত্বের কথা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারবে।
( এই লেখাটি ফেব্রুয়ারি মাসে লিখেছিলাম। লেখার পরে ‘অনুষ্টুপ’ পত্রিকার সম্পাদক অনিল আচার্য মহাশয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়। তিনি তার পত্রিকার জন্য লেখাটি আমার কাছে চেয়ে নিয়েছিলেন। লেখাটি সম্পাদক মহাশয় সম্পাদনা করে অনুষটুপ, ৫৩ বর্ষ ৩য় সংখ্যা গ্রীষ্ম ২০১৯ 'সংস্কৃতি স্মাচার' বিভাগে প্রকাশ করেছেন। ) 
                          
 

Comments

Popular posts from this blog

দু’জন বাঙালি বিঞ্জানীর গণিতিক পদার্থ বিঞ্জানে বিশ্ব বিখ্যাত আবিষ্কার

‘ইউনিভার্সাল রিলিজিয়ন’ ও ভারতীয় সাধারণতন্ত্র

লোকসভা অধিবেশন শুরুর পরেই কি ধর্মঘট প্রত্যাহার?